স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

কোভিড চিকিৎসা শুরু চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালে

কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ৬০ শয্যার বিশেষায়িত ইউনিট উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালের নতুন ভবনে করোনা চিকিৎসা।


আজ বুধবার (১ জুলাই) নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বন্দর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য উদ্বোধন করেন এই করোনা ইউনিট।


উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ, বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক, প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এসময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের লাইফ লাইন। চট্টগ্রামের মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। কোভিড-১৯ চিকিৎসায়ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে চট্টগ্রামবাসীর পাশে থাকবে বন্দর।


খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের আওতায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, বে টার্মিনাল, পিসিটিসহ অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তাই বন্দরের জন্য শুধু উদ্ধারকারী জাহাজ নয়, হেলিকপ্টার কেনারও পরিকল্পনা রয়েছে।’


নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের সেরা ১০০ কনটেইনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরের তালিকায় ৬৪ তম অবস্থানে এসেছে। আমরা চাই ৩০-৫০ তম অবস্থানের মধ্যে চলে আসতে।’


তিনি আরও বলেন, বন্দরের সঙ্গে জড়িতদের সাহসী পদক্ষেপের কারণে করোনাকালে অপারেশন এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ হয়নি। পৃথিবীর কোনো দেশ প্রস্তুত ছিলো না কোভিড-১৯ এর জন্য। উন্নত দেশেও স্বাস্থ্যসেবা থমকে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের সাহসিকতা ও সরকারের সাহসী ব্যবস্থাপনা ছিলো। একটি ল্যাব দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিলো আমাদের। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে গেছি। বিস্ময়কর নেতৃত্বে এ সংকট মোকাবিলা করছেন দেশের মানুষ।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বন্দরে হাজারো লোকের আনাগোনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন্দরের লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করেছেন। কিছু সহকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন তারা। একমুহূর্তও বন্ধ ছিল না অপারেশন কাজ। স্টেক হোল্ডাররা সহযোগিতা করেছেন। দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি, একচুলও পিছপা হবো না লক্ষ্য থেকে।’


নৌ প্রতিমন্ত্রী হাসপাতাল ভবনের ফলক উন্মোচন করেন। হাসপাতালের করোনা ইউনিট ঘুরে দেখেন এবং একটি গাছের চারা রোপণ করেন।


২৫ টি আইসোলেশন বেড এবং ২৫টি কোভিড রোগী চিকিৎসা বেড দিয়ে বন্দর হাসপাতালের এই করোনা ইউনিট। এ কার্যক্রমের জন্য ইতোমধ্যে ১৩ জন ডাক্তার, ৩৬ জন নার্সসহ মোট ১৫৯ জন চিকিৎসা কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন হাই ফ্লো অক্সিজেন সাপ্লাই এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফ্লোমিটার, ৬ টি হাই ফ্লো নজল ক্যানোলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেট ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে।


বন্দর সূত্রে জানা যায়, বন্দরের কর্মচারীসহ বন্দর পরিবারের ১৬৬ জন সদস্য করোনা পজিটিভ হিসেবে সনাক্ত হয়েছেন। বন্দরের এই হাসপাতালে বন্দরের ৭০০০ কর্মচারী, বন্দর কর্মচারীর পরিবারের সদস্য, কর্মচারীর নির্ভরশীল পিতা-মাতা ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোনসহ মোট প্রায় পঞ্চাশ হাজার ব্যক্তির চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন এক হাজারের অধিক চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আউটডোরে চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন।

আরো সংবাদ