স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

এক কৃষকের ৭০ লাখ টাকার কচুর চারা বিক্রির টার্গেট

খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার ঘোনা গ্রামের বাসিন্দা নিউটন মণ্ডল পানিকচু চাষ করেন ১৪ বছর ধরে। পানিকচু চাষ করে সফল কৃষকদের তালিকায় তিনি এখন ১১তম।  শুধু কচু চাষ এবং বিক্রি নয়; এর সঙ্গে তিনি গড়ে তুলেছেন কচুর নার্সারি।

এবার তিনি ২০ লাখ কচুর চারা তৈরি করছেন। সারাদেশের গ্রাহক ছাড়াও তিনি সরকারি কন্দাল ফসল প্রকল্পের কাছে এই চারা বিক্রি করবেন। দুটি গ্রেডের চারা বিক্রি বাবদ এবার ৭০ লাখ টাকা আসবে বলে তিনি আশা করছেন। এছাড়া প্রতি বছর কচু, কচুর লতি বিক্রি করেও তিনি চার লাখ টাকা আয় করেন।

কচুচাষি নিউটন মণ্ডল জানান, ২০০৬ সালে দুই কাঠা জমিতে পরীক্ষামূলক কচু চাষ করেন। পরে এক বিঘা (৫০ শতক) জমিতে কচু চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর একই জমিতে তিনি পানি কচু চাষ করে আসছেন। তার চাষের কচু ৬-৭ ফুট লম্বা এবং ১৫ থেকে ৩৫ কেজি হওয়ায় অনেক দর্শক দূর-দূরান্ত থেকে তার দেখতে আসেন। কচু দেখে অনেক দর্শক কিনেও নিয়ে যান।

দর্শকরা বলেন, নিউটন মণ্ডলের চাষ করা কচু খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। একটি কচু ১০০ টাকায় কিনলে চার-পাঁচ বার (ওয়াক্ত) খাওয়া যায়।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের ঘোনা মাদারডাঙ্গা গ্রামে বাড়ি নিউটন মণ্ডলের। দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশ দিয়ে গেলেই দেখা মেলে পানিকচুর খেত।

একসময় বেসরকারি পাটকলে কাজ করতেন নিউটন মণ্ডল। পাটকলে কাজের সময় শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা তাকে পেয়ে বসে। মিলের কাজ ছেড়ে দেন। তিনি ভাবেন কষ্ট হলেও চাষাবাদের কাজ করবেন। ২০০৫ সালে তিনি এক বিঘা ধান চাষ করেন। কিন্তু ধানে যে খরচ তাতে পোষায় না। তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে একজনের কচু চাষ দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন এবং সেখান থেকে কিছু চারা নিয়ে এসে চাষ করেন। প্রথমে দুই কাঠা জমির কচু বিক্রির হিসাব-নিকাশ করার পর অন্য কোনো চাষ আর তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। তখন থেকে তিনি কচুই চাষ করে আসছেন।

নিউটন মণ্ডল বলেন, ‌৫০ শতক জমি থেকে কচু, কচুর লতি, কচুর ফুল, কচুর কচিপাতা ও চারা বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে চার লাখ টাকা নিট লাভ থাকে। এছাড়া কয়েক বছর ধরে কচুর ডাটা ছিঁলে রোদে শুকিয়ে সেটা প্রতিকেজি ১২৫ টাকা দরে কোরিয়ায় পাঠানো হয়। তবে এবার করোনার কারণে পাঠাতে পারছেন না বলে জানান এই চাষি।

শুধু নিজে নন, তার কাছ থেকে বিভিন্ন জেলায় যারা কচুর চারা নিয়ে চাষ করছেন তাদের কাছ থেকে আবার শুকনো কচুর ডাটাও কিনে নেন। তাদেরকে প্রতিকেজি ১২০ টাকা করে দাম দেন। আর কোরিয়ার বায়ারদের কাছে তিনি ১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।

আরো সংবাদ