স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

করোনার ভুয়া রিপোর্টের কথা স্বীকার করল আরিফ-সাবরিনা দম্পতি

জেকেজি হেলথকেয়ার চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক (বরখাস্ত) ডা. সাবরিনা চৌধুরী এবং তার স্বামী (প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী) আরিফ চৌধুরী রিমান্ডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে করোনা পরীক্ষার নামে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তবে এই অপকর্মের জন্য তারা একে অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে  এসব তথ্য দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।

তিনি বলেন, আরিফ ও সাবরিনা করোনাকে কেন্দ্র করে তাদের জেকেজি হেলথ কেয়ারের ভুয়া রিপোর্টের কথা স্বীকার করলেও কি পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে সেটা বলে নি।

আব্দুল বাতেন বলেন, কি পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে সেটি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সাবরিনার তিন দিনের রিমান্ড শেষ হবে আজ। আরিফের রিমান্ডের প্রথম দিন। প্রয়োজনে সাবরিনাকে আবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, জেকেজি করোনায় টেলিমেডিসিন সেবার নামে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সেসব টাকা কোথায় গেছে সেসব খতিয়ে দেখা হবে।

আরিফ ও সাবরিনা আমাদেরকে জানিয়েছে, জেকেজি ওভাল গ্রুপের একটি সিস্টার কনসার্ন। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোন ধরনের বৈধ কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান,গতকাল সন্ধ্যায় তাদের একদফা মুখোমুখি করা হয়েছিল। আজ আবার তাদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় ডিবি কার্যালয়ে আরিফকে দেখে খেপে উঠেছিলেন সাবরিনা। বলেছেন, আরিফের জন্যই আজ তার এই অবস্থা। একই সঙ্গে করোনা জালিয়াতির বিষয়ে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও অস্বীকারও করেন তিনি।

সাবরিনার দাবি, জেকেজি ও ওভাল গ্রুপের অনেকেই এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। আরিফ চৌধুরীর এই কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত হয়রানির কারণে তিনি তাকে ডিভোর্সও দিয়েছেন। তবে আরিফ বলেছেন, সাবরিনার কারণে এই অপকর্মে জড়িয়েছেন তিনি।

পুলিশ জানায়, জেকেজি হেলথকেয়ার থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার রোগীকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০টি প্রতিবেদন তৈরি করা হয় জেকেজি কর্মীদের ল্যাপটপে। যার মাধ্যমে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও প্রতিটি পরীক্ষার জন্য নেয়া হতো সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে ১০০ ডলার।

গত ২৩ জুন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর ৪টি মামলা করা হয় তেজগাঁও থানায়। গত রোববার সাবরিনাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও ডিসি অফিসে আনা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এছাড়া ডা. সাবরিনা ও আরিফুল তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংক হিসাব ৩০ দিনের জন্য জব্দ করেছে দেশের কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এছাড়া জেকেজির প্রতারণার বিষয় অনুসন্ধান করবে দুদক।

আরো সংবাদ