স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

হেঁচকি বন্ধ করবেন যেভাবে

খাবার খাওয়ার সময়, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়।

যা খুবই অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর একটি বিষয়। হঠাৎ করে খাওয়ার সময়, ঘুমের মধ্যে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতেই হেঁচকির সমস্যা হতে পারে। এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি আসে। এ সমস্যায় পানি খেলে স্বস্তি মেলে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ যায়েদ হোসেন বলেন, ‘হেঁচকি কোনো রোগ নয়, সাধারণত গলায় খাবার আটকে গেলে এ সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া অত্যধিক স্ট্রেস, উদ্বিগ্নতার কারণে এ সমস্যা হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ হেঁচকির সমস্যা হলে অবশ্য পানি খেতে হবে। আর এক টুকরো আদা মুখে দিয়ে চিবালে এ থেকে মুক্তি মেলে।’

হেঁচকি কেন হয়?

বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিহীন এই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন।

হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনির মত হয় যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিক’ শব্দ তৈরি হয়।

ফুসফুসের নীচের পাতলা মাংসপেশীর স্তর, যেটিকে ডায়াফ্রাম বলে, হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।

হেঁচকি ওঠার একশো’র বেশি মেডিক্যাল কারণ থাকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো খুবই সামান্য কারণেই হয়ে থাকে।

ওষুধ নির্মাতা সংস্থা অ্যাকমে’র সিনিয়র ম্যানেজার ও চিকিৎসক আফরোজা আখতার বলেন, “হেঁচকির সবচেয়ে সাধারণ কারণ দ্রুত খাবার গ্রহণ করা।”

এ ছাড়া খুব গরম বা ঠাণ্ডা খাবার খেলে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা হঠাৎ ওঠানামা করে, যার কারণে হেঁচকি হয়। আর অতিরিক্ত ঝাল ও স্পাইসি খাবার খেলেও হতে পারে।

এছাড়া কিছু অসুখের ক্ষেত্রেও মানুষের হেঁচকি হতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই হেঁচকি শুরু হওয়ার জন্য এসব কোনো কারণেরই দরকার হয় না।

হেঁচকি বন্ধে যা করবেন-

হেঁচকি বন্ধ করতে আদার রস খেতে পারেন। এক টুকরো আদা মুখের ভেতরে দিয়ে চুষতে থাকুন।

হেঁচকি উঠলে এক চামচ চিনি বা মিছরি খেয়ে নিন। দ্রুত হেঁচকি বন্ধ হবে।

হেঁচকি হলে দুটো এলাচ চিবিয়ে খান কিংবা এলাচের গুঁড়োর সঙ্গে একটু পানি মিশিয়ে খেতে পারেন।

পাতিলেবুও হেঁচকি দূর করে। হেঁচকি উঠলে এক টুকরো পাতিলেবু জিভের ডগায় রেখে চুষতে থাকুন। হেঁচকি কমে যাবে।

এক চা চামচ মধু এবং এক চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে খেতে পারেন।

বড় একটি নিঃশ্বাস নিন এবং যতক্ষণ সম্ভব আটকে রাখার চেষ্টা করুন। সেই সঙ্গে নাক চেপে রাখতে ভুলবেন না৷ যাতে বাতাস বেরিয়ে যেতে না পারে।

হেঁচকি সাধারণত আপনা থেকেই ভাল হয়ে যায়, তবে যদি অতি দীর্ঘসময় ধরে হেঁচকি উঠতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া নিয়মিত হেঁচকিতে দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রম ব্যহত হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার উপদেশ দেন বিশেষজ্ঞরা।

আরো সংবাদ