স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

আরব দেশের আদলেই নির্মিত হলো মসজিদ

এবার চট্রগ্রামের রাউজান উপজেলার উরকিরচর ৪ নং ইউনিয়নে নির্মিত হলো আরব দেশ গুলির মতো মসজিদ।

প্রথমদিকে এলাকাবাসীরা এই মসজিদ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করলেও পরবর্তীতে সরকারি বেসরকারি প্রবাসীদের সার্বিক সহযোগিতায় নির্মিত হয় উরকিরচর জামে মসজিদ কমপ্লেক্স।

আজ শুক্রবার ( ৩১ জুলাই) জুমার নামাজের মধ্যদিয়ে মসজিদটির শুভ  উদ্বোধন করা হয়ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সদস্য রেলপথ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, আধুনিক রাউজানের রূপকার,  এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ, রাউজান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যন ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ, উরকিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল জব্বার সোহেল, সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম।এ ছাড়া স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তি সহ মসজিদ পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

মসজিদের অবস্থান : স্থানীয় এলাকাবাসীর দানকৃত প্রায় ৮০ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এই উরকিরচর জামে মসজিদ কমপ্লেক্স। মসজিদের অবস্থান মদুনাঘাট থেকে কাপ্তাই যেতে বাম পাশ্বে উরকিরচর সড়ক। এ সড়ক ধরে শেষ সীমান্তে উরকিরচর বাডীঘোনা সীমান্তের একটু আগেই রাস্তার পশ্চিম পাশ্বে অবস্থিত উরকিচর জামে মসজিদ কমপ্লেক্স।

নবনির্মিত এই মসজিদ সম্পর্কে মসজিদ নির্মাণ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কালাম মেম্বার স্বাধীদেশটিভি’কে বলেন, মসজিদের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারিতে। মসজিদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এতে থাকছে মসজিদ ভবন, মাদ্রাসা, এতিম খানা, ঈমামের বাস ভবন, অজু খানা, ঈদ গাঁ ময়দানসমূহ।

মসজিদ কমপ্লেক্স এর আয়তন  (৪২০’X৩৫০) ১২০০০ বর্গফুট মসজিদ ভবনের আয়তন  (৭৫X ৬৫) ৫০০০ বর্গফুট। এরই মাঝে ২য় তলা ও মসজিদ ভবনের নিচ তলার কাজ প্রায় শেষ।

তিনটি অংশ বিশিষ্ট ডিজাইনকৃত মেহরাব যা আরব দেশে বিদ্যামান এমন করে তৈরী করা হয়েছে। (১ম অংশে) খুৎবা পাঠের জন্য যাওয়ার পথ। দরজা বিশিষ্ট (২য় অংশ) যা সবসময় ইমাম সাহেব নামাজ পড়াবেন। (৩য় অংশে)খুৎবার স্থান তিন ফুট উচুকৃত ডাইস সমৃদ্ধ। মেহেরাবের দক্ষিণ পাশ্বে ইমাম আসার দরজা যা প্রয়োজনে বাইরের মরদেহ গেলে জানাজার নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করতে পারবে। মেহেরাব ডানে বামে তিনটি করে সেলফ রাখা হয়েছে। ভেতরে ৪টি সুসজ্জিত পিলার ৪টি করে মোট ১৬টি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ৪৬টি সিলিংফ্যান ও ৮টি ওয়াল ফ্যান রাখা হয়েছে। মধ্যখানে (২৪X২০) ছাদ খালি রাখা হয়েছে। যার চারপাশ্বে ১৬টি স্পোট লাইট ও ওয়াল ৭টি ফ্যান লাগানো হয়েছে।

নীচ তলায় ৯টি এয়ারকন্ডিশন বসানো হয়েছে। ভেতরে রুমের মধ্যে এয়ারকন্ডিশন লাগানো হয়েছে। তিনটি অ্যালুমিনিয়ামের রয়েছে ও মধ্য দেয়ালে অ্যালুমিনিয়াম ও গ্লাস দেয়া হয়েছে। সাউন্ড সিস্টেম, সোলার, আইপিএস, ঝর্ণাবাতি রয়েছে। ডান পাশ্বে উপরে উঠার সিঁড়ি ও মহিলাদের নামাজের সু ব্যবস্থা রয়েছে। মেহরাবের উপরে পিতল দিয়ে কালিমা লিখিত হয়েছে। টাইলস দিয়ে ৪ হাজার ফুটের ১২ কাতার করা হয়েছে এতে করে ৭শত জন মুসল্লি নামাজ এক সাথে আদায় করতে পারবেন। নিচে মোট ২৩ অ্যালুমিনিয়ামের ও গ্লাস সম্বলিত জানালা রয়েছে। সামনের বারান্দায় (৭X৮ ) যার উপরে ৫টি সামনের বারান্দায় একটি সেগুন কাঠের দরজা রয়েছে যার সাইজ (৭.৫X৯)  এবং বাইরে ৪টি এসএস মোডানো পিলার বসানো হয়েছে যার সাইজ  (৭.৫X১৫)  এতে সৌন্দর্য বৃদ্ধি সহায়তা করবে । দরজার উপরে এসএস দিয়ে মসজিদের নাম আল্লাহর ও রাসুল(সা:)  লাইট দিয়ে লাগানো হয়েছে। আল্লাহ লেখাটি (৬X৭) আকারে। দরজার সিঁড়ির ধাপগুলি (২৮X১২) পাথর দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। সিঁড়ির দক্ষিণ পাশ্বে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দরজার সামনে পূর্বেও বিশাল মাঠ যা ঈদ গাঁ এর জন্য ব্যবহার হবে এবং যা বাউন্ডারী ওয়াল ও প্রধান গেইট বসানো হবে। মাঠের অপর পাশ্বে থাকবে মাদ্রাসা, এতিম খানা, অজুখানা ও ইমাম মোয়াজ্জেমদের জন্য বাসস্থান এবং একেবারে মাঠের উত্তর সীমানায় থাকবে করব স্থান।

২য় তালা যা থাকবে  : ৮টি এয়ারকন্ডিশন ও ৩০সিলিং ফ্যান থাকবে। যে তিনটি টাইলস দিয়ে সাজানো ও মধ্য গ্যাপের চারিপাশ্বে এসএস ও গ্লাস দিয়ে রেলিং লাগানো থাকবে।

এখানে ২৩টি অ্যালুমিনিয়াম এসএস  ও গ্লাস দিয়ে জানালা সিঁড়িঘর অ্যালুমিনিয়াম গ্লাস দিয়ে ঘেরা থাকবে। সিঁড়িঘরের ছাদে একটি রুম রয়েছে যা মসজিদের লাইব্রেরি, ইমাম ও খতিবের বিশ্রাম ঘর হিসেবে ব্যবহার হবে। ছাদের উপরে চতুর্পাশ্বে আল্লাহ ও রাসুল(সা:) লিখা  ব্লোক দিয়ে রেলি দেয়া থাকবে। মধ্যে (২০’X২০’) জায়গায় একটি বড় গম্বুজ আছে। আর সিডিঘরের উপরে ৩০’ সুন্দর মিনার দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যার উচ্চতা হবে ১শত মিটার। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।পুরো মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় করা হবে ৫ কোটি টাকা এই পর্যন্ত অস্থায়ী মসজিদসহ এ যাবৎ ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

এতে অর্থের যোগানদেন প্রবাসী, গ্রামবাসী, সরকার, শুভকাঙ্খী মসজিদ নির্মাণ কমিটি ও পরিচালনা পরিষদ। এই মসজিদটি ইসলামিক নির্দেশনা হিসেবে এলাকাটিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলে অনেকে মনে করেন।

আরো সংবাদ