স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

অর্থনৈতিক মন্দার কবলে ভারত

নয়া দিল্লির সাউথ এক্সটেনশন মার্কেট সাধারণত বছরের এই সময়ে মানুষে সরগরম থাকে। ক্রেতারা দীপাবলির ঠিক আগে সোনার গয়না এবং নতুন পোশাক কিনতে এই মার্কেটে ভিড় জমান। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উদযাপনে ভাটা পড়ায় এখন অনেক দোকান পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে।

উশনাক মাল মদন লাল ব্রাইডাল শপের মালিক অশোক ট্যানডন বলেন, “আমাদের চকচকে পোশাক ২০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলারে পর্যন্ত বিক্রি হয়। উৎসব মৌসুম দাম আরও ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়। তবে এবার ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে লোকজন আশেপাশের শহর থেকে আসছে না। কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছে না। আমরা এর আগে এরকম কিছু দেখিনি।”

নয়া দিল্লির সাউথ এক্সটেনশন মার্কেটে বেচাকেনার পতন ভারতীয় অর্থনীতির মন্দাকে প্রতিফলিত করছে। দেশটির অর্থনীতি কঠোর লকডাউনের আগে থেকেই মন্দায় পতিত হয় যখন জিডিপি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে এসে আগের তুলনায় ২৪ শতাংশ কমে যায়।

মার্সেলাস ইনভেস্টমেন্টের ম্যানেজারের প্রতিষ্ঠাতা সৌরভ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই মহামারী ভোক্তাদের আচরণ পরিবর্তন করছে। বৃহত্তর সংগঠিত, উন্নত পুঁজির কোম্পানিগুলো তাদের শাখা এবং এবং পপ অপারেশনের খরচে শেয়ার লাভ করছে।”

দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতির দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্রসহ অর্থনীতিবিদদের একটি দলের মতে, ভারতের অর্থনীতি টানা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের জন্য সংকুচিত হয়েছে।

ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে জিডিপি ৮.৬% সংকুচিত হয়েছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে জুন মাসে অর্থনীতির প্রায় ২৪ শতাংশ পতন হয়েছে।

আরবিআই-র প্রকাশনায় লেখা হয়েছে, ‘দেশের ইতিহাসে প্রথমবার ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম অর্ধে মন্দার কবলে পড়েছে ভারত।’ আগামী ২৭ নভেম্বর অফিসিয়াল পরিসংখ্যান রিপোর্ট প্রকাশ করবে সরকার।

তবে উৎসবের মৌসুমে অর্থনীতির চাকা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। বিক্রিবাটা কমলেও ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটায় বিভিন্ন সংস্থার অপারেটিং লাভ বেড়েছে। ব্যাংকের নগদের পরিমাণ, গাড়ি বিক্রির পরিসংখ্যান অক্টোবর মাসে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত মাসে আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের প্রস্তাবিত সময়ের আগেই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।

তবে মূল্যবৃদ্ধির চাপ ও অপ্রত্যাশিত মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতিতে হস্তক্ষেপের জেরে বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্টের ঝুঁকি রয়েছে বলে আরবিআই-র বুলেটিনে লিখেছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের অভিমত, করোনার দ্বিতীয় দফার প্রাদুর্ভাবে প্রভাব পড়বে বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধিতে। সেই ঝুঁকিও থাকছে।

আরো সংবাদ