জাতীয় কংগ্রেসের প্রায় একবছর পর ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। শনিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে হস্তান্তর করেন।
এ কমিটিতে চট্টগ্রাম থেকে অন্তত দশজন নেতা স্থান পেয়েছেন। এবারের কমিটিতে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম শাহীন; তিনি যুবলীগের আগের কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।

এদিকে যুবলীগের নতুন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব সামলে আসা চট্টগ্রামের সন্তান বদিউল আলম। তৃণমূল থেকে উঠে আসা বদিউল আলম রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন পটিয়ার ১৩ নং সুচক্রদন্ডী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে।
এরপর পটিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ১৯৮৪-১৯৮৫ সাল মেয়াদে। ১৯৮৫-১৯৮৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হিসেবে। এরপর ১৯৮৭-১৯৯১ সাল পর্যন্ত ছিলেন পটিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। ১৯৮৭-১৯৮৯ পর্যন্ত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ১৯৮৯-১৯৯১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে ১৯৯২-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সদস্য, ১৯৯৪-১৯৯৮ সালে সহ-প্রচার সম্পাদক এবং ১৯৯৮-২০০২ সাল পর্যন্ত শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বদিউল আলম।
যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু মুনির মো. শহীদুল হক রাসেল দায়িত্ব পেয়েছেন।
নতুন কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া কাজী মাজহারুল ইসলাম। তিনি যুবলীগের আগের কমিটিতে উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
এদিকে যুবলীগের নতুন কমিটিতে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে স্থান পেয়েছেন চট্টগ্রামের চন্দনাইশের সন্তান মীর মুহাম্মদ মহিউদ্দিন। ২০০৮ সালে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে একমাত্র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৩ সালের যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে উপ-কৃষি ও সমবায় সম্পাদক নির্বাচিত হন মীর মহিউদ্দিন।
যুবলীগের এবারের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপ প্রচার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সন্তান আদিত্য নন্দী; তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন।
যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সন্তান নাসির উদ্দিন মিন্টু সহ সম্পাদক হিসেবে জায়গা পেয়েছেন; তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও সাতকানিয়া পৌর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট নতুন কমিটিতে সিসি সদস্য পদে স্থান পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম থেকে নির্বাহী সদস্য পদে আরও স্থান পেয়েছেন, কায়কোবাদ ওসমান ও প্রফেসর ড. বিমান চন্দু বরুয়া। এছাড়া আনোয়ারার সন্তান মো. মোনায়েম খান যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফের সদস্য হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শুদ্ধি অভিযানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসা যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসে গত বছরের ২৩ নভেম্বর তিন বছরের জন্য নেতৃত্বে আসেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে সামস পরশ। তার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক হন যুবলীগের ঢাকা উত্তরের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
শেখ মনির ভাই যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলে শেখ ফজলে ফাহিম নতুন কমিটিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন, যিনি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি।
শেখ সেলিমের আরেক ছেলে শেখ ফজলে নাঈমও স্থান পেয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীতে। ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনকেও সভাপতিমণ্ডলীতে রাখা হয়েছে।