স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

পুলিশের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল !

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হারুনুর রশীদের প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সেদিনই তাকে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি জানিয়েছেন রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন।

এদিকে, এএসআই হারুনকে তাহেরপুর ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহারের পর তার অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী। এএসআই হারুনের চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, আটক বাণিজ্য ও মাদক বাণিজ্যে তার সম্পৃক্ততার অনেক কাহিনী বের হয়ে আসছে।  তবে টাকা গুণে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার ভিডিওটি লকডাউন সময়ের বলে জানা গেছে। লকডাউনে দোকানপাট খুললেই এএসআই হারুনকে ঘুষ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। এএসআই হারুণ অবশ্য এ নিয়ে এখন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, লকডাউনের সময়ে বাগমারার সাজুড়িয়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী লেদ আজাদকে হেরোইন ও ইয়াবাসহ আটক করে এএসআই হারুন মোটা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। রামরামা হাজরাপুকুর গ্রামের সুবদের ছেলে গাঁজা ব্যবসায়ী সনাতন দাসকে মাদকসহ আটকের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন এবং জব্দ করা গাঁজা এএসআই হারুন আরেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন।

স্থানীয়রা অভিযোগে আরও জানান, তাহেরপুরের পাশ্বর্তী পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামের ইমন নামে এক ছাত্রকে ১০টি ইয়াবা দিয়ে সাজানো মামলায় চালান করেন হারুন। ইমনের পরিবারের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে প্রতিপক্ষ এএসআই হারুনকে টাকা দিয়ে এই কাজ করায়।

অভিযোগ রয়েছে, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা গ্রামের একজন সরকারি চাকরিজীবীকে এক নারীর ঘরে ঢুকিয়ে ধর্ষণ মামলা দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকা আদায় করেন এএসআই হারুন।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, এএসআই হারুণের মূল কাজই ছিল দোকানে দোকানে চাঁদাবাজি করা আর মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা।

এদিকে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, করোনাকালে লকডাউনের সময় তাহেরপুর বাজারের এক মোবাইল ফোনের দোকানে ঢুকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এএসআই হারুন। জলন্ত সিগারেট মুখে রেখে সে দোকানদারের সঙ্গে দরকষাকষির পর দুই হাজার টাকা ঠিক হয়। পরে টাকা গুণে দেখে তিনি আরও এক হাজার টাকা দাবি করেন। পুরো টাকা নিয়েই তিনি একপর্যায়ে দোকান ত্যাগ করেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ঘটনাটা যাই থাকুক, প্রাথমিক তদন্তে আমাদের মনে হয়েছে এএসআই হারুন কাজটা ঠিক করেননি। তাই তাকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। সেই প্রতিবেদনে যদি এএসআই হারুন অভিযুক্ত হন তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরো সংবাদ