স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

ভাস্কর্য নিয়ে আমরা সরাসরি কোনো সংঘাতে যাব না : ওবায়দুল কাদের

ভাস্কর্য নিয়ে চলমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা সরকারের আছি, সব ব্যাপারে মাথা গরম করলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি হ্যান্ডেল করছেন। যেভাবে তিনি করোনা মোকাবেলা করছেন, সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তিনি এখানে এসেছেন। কাজেই তিনি জানেন, কোন পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমরা সরাসরি কোনো সংঘাতে যাব না। আমরা যুক্তি-তর্ক দিয়ে বলব মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। আজকে যারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলেন তারা কি জানেন না সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোতেও ভাস্কর্য আছে। সেখানে ভাস্কর্য যদি ইসলামবিরোধী না হয়, তবে বাংলাদেশে কেন- এটা অযৌক্তিক?

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার জাতীয় তিন নেতার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি আমাদের জাতীয় নেতা, গণতন্ত্রের মানসপুত্র, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক গুরু। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আমলে গণতন্ত্রের জন্য তিনি বারবার লড়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, দেশত্যাগ পর্যন্ত করেছেন। তিনি বারবার বলতেন, গণতন্ত্রই আমার জীবনের মূলমন্ত্র। শাসনতন্ত্রের প্রশ্নে জনগণের রায়ই শেষ কথা- তিনি সেটা বলতেন।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজকে আমরা এ অবস্থায় এসেছি। বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও ’৭৫ পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যকাণ্ডের পর ২১ বছর গণতন্ত্র শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে এসে তার প্রথম কাজই ছিল গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করা। এজন্য তিনি লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। এখন গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে, কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। এদিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা হবে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া। গণতন্ত্র একটি বিকাশমান ধারা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশে একটি মহল আছে যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা আচরণে, তাদের কর্মকাণ্ডে কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আছে, এরা গণতন্ত্রের শত্রু। এরা গণতন্ত্রের বিকাশ চায় না। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে। বাংলাদেশে এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউই সেটা করেনি। যাদের নিজেদের ঘরে গণতন্ত্র নেই, তারা বাইরে এসে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে এটা আশা করা যায় না।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পরাজিত হোক আর বিজয়ী হোক কোনো বিদ্রোহীকে আমরা মনোনয়ন দিচ্ছি না। এর মাধ্যমে সবার কাছে বার্তা যাবে যে, বিদ্রোহ করলে শাস্তি আছে। এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে দলের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওছার, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরো সংবাদ