স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

কৃষক আন্দোলন : দিল্লী পুলিশের মামলার জালে সুইডেনের পরিবেশকর্মী গ্রেটা থানবার্গ

বিশ্ব পরিবেশ আন্দোলনের সুইডিশকর্মী গ্রেটা থানবার্গের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভারতেকর দিল্লী পুলিশ। ভারতে চলমান কৃষক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তাদের পক্ষে নিজের অবস্থান জানিয়ে মাইক্রো ব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন গ্রেটা।

আর এই অপরাধে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) তার বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগে পুলিশ বলেছে, গ্রেটা থানবার্গ ফৌজদারি চক্রান্তে যুক্ত এবং ধর্মীয় জিগির তুলে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন।

ইতোমধ্যে, ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয়েছে নজিরবিহীন বাকযুদ্ধ। রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিভাজন স্পষ্ট। সরকারের কাছে কৃষকদের এই আন্দোলন কতটা স্পর্শকাতর তার নতুন প্রমাণ দিল্লী পুলিশের আচরণ।

মার্কিন পপ গায়িকা রিয়ানাসহ আন্তর্জাতিক যে সকল আইকন কৃষক আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে মত প্রকাশ করেছেন, গ্রেটা থানবার্গ তাদের মধ্যে অন্যতম।

আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে করা টুইটে ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি নিকটতম ভারতীয় দূতাবাসে বিক্ষোভ করার পরামর্শ দেন গ্রেটা।

মামলার পর আরেকটি টুইটার বার্তায় গ্রেটা বলেছেন, এরপরও তিনি কৃষকদের সঙ্গে থাকবেন এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সমর্থন করবেন। কোনো ঘৃণা, হুমকি বা মানবাধিকার লঙ্ঘন তাকে টলাতে পারবে না।

এদিকে, কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের নেটিজেনরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। সেলিব্রিটি মহল থেকে কৃষকদের পক্ষে-বিপক্ষে গাদা গাদা টুইট শুরু হয়। রাজনৈতিক নেতারাও তাতে যোগ দেন। শুরু হয় বিদেশিদের সমালোচনা।

এ পরিস্থিতিতে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযথা হস্তক্ষেপ না করার পরামর্শ দিয়ে টুইটযুদ্ধে অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। ব্যক্তিবিশেষের টুইটারবার্তার সমালোচনা করে নজিরবিহীনভাবে বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি সুইডেনের স্টকহোমে জন্ম নেওয়া গ্রেটা থানবার্গের মা অপেরাশিল্পী মালিনা অ্যার্নমান ও বাবা অভিনয়শিল্পী ভানতে থানবার্গ। মাত্র আট বছর বয়স থেকে পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে ভাবতেন গ্রেটা। পরিবেশ আন্দোলনের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ১৫ বছর বয়সে স্কুল ছাড়েন। খাবারের তালিকা থেকে চিরদিনের জন্য বাদ দেন মাংস। কার্বন নিঃসরণ কমানোর দাবিতে সরব হন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। গ্রেটার নো ওয়ান ইজ টু স্মল টু মেক আ ডিফরেন্স নামের বইটি থেকে যত টাকা আয় হয়েছে, তার সবই তিনি দান করেছেন পরিবেশ রক্ষার কাজে। এই আন্দোলন তাকে এনে দিয়েছে বিকল্প নোবেল খ্যাত ‘রাইট লাইভলিহুড’ পুরস্কার।

আরো সংবাদ