স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

হাটহাজারীতে অপহৃত প্রবাসীকে উদ্ধার করল পুলিশ

দিনে-দুপুরে তুলে নিয়ে যাওয়া সেই প্রবাসীকে উদ্ধার করেছে হাটহাজারী থানা পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে ফটিকছড়ির নানুপুর থেকে তাকে উদ্ধার করে আজ সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।

মনছুরের জেঠাতো ভাই মো. ইউছুপ বলেন, ‘মনছুরকে উদ্ধার করলেও পুলিশ তাকে আমাদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়নি। ঘটনার বর্ণনা লিখে একটি ফরোয়াডিং দিয়ে মনছুরকে আজ সকালে কোর্টে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

আইনজীবী মনির হোসেন বলেন, মনছুরকে তার পরিবারের কাছে জিম্মায় দিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। সন্ধ্যায় তিনি মুক্ত হয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে পুলিশ লিখেছে, মাস দেড়েক আগে “ভিকটিম” সোহেল মনছুর দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে চারটি স্বর্ণের বার আনার ঘোষণা দেন। এসময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শুল্ক আদায় করে দুটি সোনার বার মনছুরকে ফেরত দেন। বাকি দুটি সোনার বার জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

মনছুর একজন স্বর্ণ চোরাকারবারি। সে (মনছুর) জসিম নামে দুবাই প্রবাসী আরেক চোরাকারবারির দুটি সোনার বার মেরে দিয়েছে। এটা নিয়ে এক সপ্তাহ আগে মনিয়াপুকুর পাড় এলাকায় প্রবাসী জসিমের পক্ষের লোকজন এবং মনছুরের মধ্যে একটি সালিশি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে মনছুরের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ জসিমকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু টাকা পরিশোধে মনছুর নানা টালবাহানা করতে থাকে।

গত রোববার বেলা দুইটার দিকে মনছুরকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় জসিমের ভাগিনা রাশেদসহ ৪-৫জন। মনছুরকে তুলে নিয়ে ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজমের জিম্মায় রাখা হয়। রোববার রাতেই সেখানে গিয়ে মনছুরকে উদ্ধার করে পুলিশ।

হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার রাতে ফটিকছড়ির নানুপুর থেকে মনছুরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরপর আইনানুগভাবে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

যারা মনছুরকে তুলে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওসি রফিকুল বলেন, ‘মনছুরকে বলেছি মামলা দিলে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু তিনি (মনছুর) মামলা করবেন না বলে জানিয়েছেন।’

যদিও মনছুরের জেঠাতো ভাই মো. ইউছুপ বলেন, ‘আমরা তো গতকালই অভিযোগ দিতে থানায় গিয়েছি। কিন্তু পুলিশ তো আমাদের কথা আমলেই নেয়নি।’

প্রসঙ্গত, গত রোববার বেলা দুইটার দিকে হাটহাজারীর মনিয়াপুকুর পাড় এলাকা থেকে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে করে মনছুরকে তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর মনছুরকে ফটিকছড়ির নানুপুর ইউনিয়নে পরিষদের চেয়ারম্যানের জিম্মায় রেখে দেয় অপহরণকারীরা। এরপর মনছুরের পরিবারকে ফোন করে বলা হয়, সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনতে।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, উদ্ধার হওয়ার আগে রোববার রাতে মনছুরের কাছ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা পাওনা আছে বলে নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক সই নেন অপহরণকারীরা।

মনছুর মনিয়াপুকুর পাড় এলাকার মৃত মনির আহমদ চৌধুরীর ছেলে। আজ তার ‘আকদ’ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।

আরো সংবাদ