স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

চকরিয়ায় গৃহবুধকে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন!

চকরিয়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় নুর আয়শা (২৫) নামের এক গৃহবধুকে গাছের সাথে বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শওকত ওসমান নামের স্থানীয় এক সুদি কারবারির বিরুদ্ধে।

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মধ্যযুগীয় কায়দায় এমন নির্যাতন করা হয়। মঙ্গলবার (১৬মার্চ) চকরিয়া উপজেলা বরইতলী ইউনিয়নের মোরাপাড়ার হাপানিয়াকাটা এলাকায় নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও চিত্রটি আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ ঘটনায় পুলিশ শওকত ওসমানের বাবা জহির আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। সে সাথে ভিকটিম নুর আইশাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ভোক্তভুগি নুর আয়শা ওই এলাকার আলী আহমদের স্ত্রী। স্বামী আলী আহমদ একজন দিনমজুর বলে জানাগেছে।

বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নিয়াজুল ইসলাম বাদল বলেন, কয়েক মাস আগে নুর আয়শা তার স্বামীর চিকিৎসার জন্য শওকত ওসমানের কাছ থেকে চার হাজার টাকা সুদের উপর ধার নেয়। ইতিমধ্যে নুর আয়শা সুদ ও আসলসহ আট হাজার টাকা পরিশোধও করে।

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে শওকত ওসমান আরো দুই হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু নুর আয়শা ওই টাকা বৃহস্পতিবার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তা মানতে নারাজ শওকত ওসমান। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শওকত ওসমান গৃহবধু নুর আয়শাকে একটি গাছের সাথে শাড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর ও অমানবিক নির্যাতন চালায়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সুদি শওকত ওসমান একটি গাছের সাথে শাড়ির আঁচল দিয়ে বেঁধে রাখে নুর আয়শাকে। এসময় নুর আয়শা তার বাঁধন খুলে দিতে বলে। কিন্তু নুর আয়শার আহবানে সাড়া না দিয়ে শওকত ওসমান কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে নুর আয়শাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এবং চুলের মুটি ধরে টানতে থাকে ও চুলের মুটিও গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরে স্থানীয় বেশ কয়েকজন মহিলা নুর আয়শাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় শওকত ওসমান।

বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার বলেন, ঘটনাটি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি সাহেবকে জানানো হয়েছে। আমি চাই এ ঘটনার একটি দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হোক।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। অভিযুক্ত শওকতকে না পাওয়ায় তার বাবা জহির আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তূতি চলছে।

আরো সংবাদ