স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভাপতি হলেন আব্দুল মোমেন

আসন্ন দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ হিসেবে বুধবার ভার্চুয়ালি মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ১৯তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভাপতি করা হয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে।

বুধবার (৭ এপ্রিল) তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসৌলু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টারের সভাপতির পদ হস্তান্তর করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সভাপতিত্ব করেন এবং ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এতে অংশ নেন।

সভার শুরুতে মোমেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টারের সভাপতি হিসেবে তার মেয়াদ সফলভাবে সমাপ্ত করায় অভিনন্দন জানান। তিনি ডি-৮ কে আরও সচল ও বেগবান করার লক্ষ্যে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ১৯৯৯-২০০১ মেয়াদে সফলভাবে ডি-৮ এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে এবং দুই দশক পর দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো ডি-৮ এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবে।

মোমেন বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রুপ থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে পূরণ করেছে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে ডি-৮ এর সভাপতিত্ব লাভ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।

তিনি বলেন, ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সম্মিলিত জনসংখ্যার ১৯ শতাংশই তরুণ। মোমেন উল্লেখ করেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে যুব সমাজের অফুরন্ত সম্ভাবনা আবিষ্কারের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘বৈশ্বিক রূপান্তরের জন্য অংশীদারিত্ব : যুব সম্প্রদায় ও প্রযুক্তি শক্তির মুক্তি’ নির্ধারণ করেছে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুব সমাজকে সহায়তা করার জন্য মোমেন ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যেহেতু ডিজিটাল যুগে টেকনোলজি এবং উদ্ভাবনী দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী প্রয়োজন, সেহেতু এ সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে তাদের সহায়তার লক্ষ্যে ডি-৮ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী সভায় করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে এবং এর অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। করোনার কারণে সৃষ্ট অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে তিনি ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য ‘ডি-৮ ডিজিটাল মার্কেট প্লেস’ এবং সবার জন্য প্রযোজ্য একটি সহনশীল ‘পোস্ট পেনডামিক’ সহযোগিতার মডেল প্রস্তুত করার কথা বলেন।

এছাড়া বিশ্ব অর্থনীতির ওপর করোনার নেতিবাচক প্রভাব দূর করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডি-৮ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ পণ্যের পাশাপাশি সেবা ক্ষেত্রেও মুক্ত এবং ন্যায়সঙ্গত প্রবেশের অধিকারে বিশ্বাস করে।

এদিকে আটটি বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্রের সংগঠন ডি-৮ এর ১০ম সম্মেলনের সমাপনী দিনে বৈঠকে বসছেন শীর্ষ নেতারা। বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বৈঠকটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হওয়া বৈঠকটিতে ডি-৮ জোটের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানরা সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। বাংলাদেশ ছাড়া জোটের অন্য দেশগুলো হলো- মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।

আরো সংবাদ