স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

করোনায় আবারো আটকে গেল প্রবাসে এনআইডি কার্যক্রম !

করোনা পরিস্থিতি অবনতির কারণে আবারো আটকে গেল প্রবাসে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহের কাজ। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উপর এখন নির্ভর করছে এই সেবা কতটুকু পাবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে পুরো বিষয়টিই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কেননা, আমাদের পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর করোনা পরিস্থিতি উন্নতি না হলে স্বাভাবিকভাবেই তারা কার্যক্রম শুরুর অনুমতি দেবে না।

প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের জন্য ইসির থেকে লোকবল পাঠানো প্রয়োজন হবে। সেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গা লাগবে। আর এতে লোক সমাগমও হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারের কাছ দেশে অনুমতি নিতে হবে। আর সেই অনুমতি কবে পাওয়া যাবে, সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর দুবাই প্রবাসীদের মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান কার্যক্রম শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এরই মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের দ্বার উন্মোচিত করে সংস্থাটি। পরবর্তীসময়ে পর্যায়ক্রমে সৌদি আরব, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের অন্য দেশে কার্যক্রমটি শুরু করার কথা রয়েছে।

 জানা যায়, সবচেয়ে বেশি সাড়া পড়েছে দুবাই প্রবাসীদের মধ্যে। যুক্তরাজ্য প্রবাসীদেরও আগ্রহ বেশ। আর মালয়েশিয়ায় তুলনামূলক কম সাড়া পড়েছে।

ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের অপারেশন প্ল্যানিংঅ্যান্ড কমিউনিকেশন অফিসার ইনচার্জ স্কোয়াড্রন লিডার কাজী আশিকুজ্জামান জানান, দুবাই থেকে অন্তত ৪শ আবেদন এসেছে। মালয়েশিয়া থেকে এসেছে অন্তত ৬০টি আবেদন।

যুক্তরাজ্য থেকে উদ্বোধনের ঠিক পরপরই ৫০টির মতো আবেদন পড়েছে বলে জানা যায়। তবে সব মিলিয়ে এক হাজারের মতো আবেদন এসেছে। ইতোমধ্যে সেসব আবেদন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা কার্যালয়ে পাঠিয়ে সরেজমিন তদন্ত করার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় তদন্তও সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেবল তাদের কার্ড প্রিন্ট করা বাকি রয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশে গিয়ে যদি প্রবাসীদের হাতে এনআইডি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব না হয়, তবে একটি ব্যবস্থা দেশেই রাখা যেতে পারে। তারা সব কাগজপত্র দিয়ে অনলাইনে আবেদন করলেন, সেই কাগজের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন সকল কাজ সম্পন্ন করে রেখে দিল। এমনকী ইতিবাচক তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কার্ডও প্রিন্ট করে রাখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দেশে এসে দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি দিয়ে কার্ড নিয়ে নেবেন।

 জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগ জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনলাইনে (services.nidw.gov.bd) প্রয়োজনীয় তথ্যদি দিয়েআবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীসময়ে প্রাপ্ত তথ্যদি যাচাই-বাছাই করে প্রবাসেই বায়োমেট্রিক সংগ্রহসহ স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।

আবেদনের সঙ্গে যে সব দলিলাদি সংযুক্ত করতে হবে:

বৈধ পাসপোর্টের কপি, বিদেশি পাসপোর্টধারী হলে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদেরকপি বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে শনাক্তকারী একজন প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্টের কপি, বাংলাদেশে বসবাসকারী রক্তের সম্পর্কের কোনো আত্মীয়ের নাম, মোবাইল নম্বর, এনআইডি নম্বরসহ অঙ্গীকারনামা, বাংলাদেশে কোথাও ভোটার হয়নি মর্মে লিখিত অঙ্গীকারনামা ও সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের প্রত্যয়নপত্র।

 বিভিন্ন দেশে প্রায় দেড় কোটির মতো প্রবাসী বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে ১১ কোটি ১৭ লাখ।

আরো সংবাদ