স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

বিমানকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর আহ্বান খোরশেদ আলম সুজনের

জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। 

বুধবার (২৮ এপ্রিল ) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব সাজ্জাদুল হাসানকে ফোন করে তিনি এ আহ্বান জানান।

সুজন বলেন, বিমান বাংলাদেশের একটি জাতীয় সম্পদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজহাতে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। তাই এ প্রতিষ্ঠানের শৌর্যবীর্য যাতে অটুট থাকে সেদিকে নজর রাখা সবারই একান্ত দায়িত্ব। 

তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে যে চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের ফ্লাইটগুলো যাত্রীর অভাবে বাতিল করা হচ্ছে। এতে করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে চট্টগ্রামের প্রবাসী যাত্রীরা। আপনি নিজেও অবগত আছেন যে চট্টগ্রাম থেকে উল্লেখযোগ্য হারে প্রবাসীরা জীবন ও জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। এসব প্রবাসী ছুটিতে দেশে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমান বাংলাদেশকে তাদের পছন্দের তালিকায় এক নাম্বারে রাখেন। বর্তমান করোনাকালে প্রবাসীদের জন্য সাধারণ ফ্লাইটের পরিবর্তে বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, যা প্রবাসীদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। বাংলাদেশ বিমান চট্টগ্রাম থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক যাত্রী পরিবহন করলেও বিশেষ ফ্লাইটের নামে বিমানের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে বিমান আজ যাত্রীশূন্য। শুধু একটি অপরিপক্ব সিদ্ধান্তের ফলে বিমান বাংলাদেশ যাত্রীহারা হয়ে গেছে। 

অন্যদিকে বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক উড়োজাহাজ এয়ার এরাবিয়া ও সৌদি এয়ারলাইন্স অনেক কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের কারণে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বিমান ব্যবসা হারাচ্ছে। এভাবে লোকসানের মুখে পড়ছে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বাংলাদেশ বিমান। বিমানের অভ্যন্তরে বসে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে কৌশলে বিমানকে ধ্বংস করে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে একটি চক্র। এদের চিহ্নিত করে সমূলে উৎপাটন আজ সময়ের দাবি। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত এবং আর্থিক সহযোগিতার ফলে বিমানের বহরে নতুন নতুন উড়োজাহাজ সংযোজন করা হয়েছে। ফলে যাত্রীসাধারণ বাংলাদেশ বিমান ব্যবহারে আগের চেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। তারপরও কী কারণে হঠাৎ করে বিমানের ভাড়া বৃদ্ধি করে বিমানকে লোকসানের পথে নিয়ে যাচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। অপরদিকে চট্টগ্রাম থেকে বিমানের ফ্লাইট না পেয়ে প্রবাসী যাত্রীরা ঢাকায় গিয়ে অন্যান্য উড়োজাহাজে করে কর্মস্থলে যাচ্ছেন যা চট্টগ্রামের সঙ্গে গভীর চক্রান্ত। 

জাতীয় পতাকাবাহী বিমানকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

এ ছাড়া বিশেষ ফ্লাইটের নামে যাত্রীদের পকেট কাটা বন্ধ করে অতিসত্বর সাধারণ ফ্লাইট চালুর অনুরোধ জানান সুজন। দেশে বিদেশে অবস্থানরত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী সুজনকে ফোন করে এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের অনুরোধ জানান।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব সাজ্জাদুল হাসান সুজনের উত্থাপিত বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে শুনেন। তিনি পরিষদের সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। 

আরো সংবাদ