স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

যুক্তরাজ্য-দক্ষিণ আফ্রিকার করোনাার ধরন চট্টগ্রামেও

চট্টগ্রামেও মিলেছে যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (স্ট্রেইন)। এ বছরের মার্চ মাসের শেষ তিনদিন ও এপ্রিল মাসের প্রথম পাঁচদিনে নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও বাসায় চিকিৎসাধীন রোগীদের নমুনায় এই স্ট্রেইন পাওয়া যায়। সুখকর খবর হচ্ছে, বর্তমানে ভারতে করোনার যে স্ট্রেইন বা ধরন পাওয়া গেছে, তার অস্তিত্ব এখনো পাওয়া যায়নি কোনো নমুনাতেই। এমন তথ্যই ওঠে এসেছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ^বিদ্যালয়ের (সিভাসু)  একদল গবেষকের গবেষণায়।

গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার নতুন ধরনের ৬০ শতাংশই হচ্ছে যুক্তরাজ্যের স্ট্রেইন। আর ৩০ শতাংশের মিল রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনের সাথে। যা গত ৫ এপ্রিলের আগেই যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকা এ দুই দেশের স্ট্রেইনের উপস্থিতি ছিল বলে ধারণা গবেষক দলটির। এর আগেও রাজধানী ঢাকায় ৫৮ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে পাওয়া গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার করোনাভাইরাসের ধরন।

গবেষকরা জানান, মার্চের ২৮ তারিখ থেকে এপ্রিলের ৫ তারিখ পর্যন্ত নগরীর মেহেদিবাগ, জামালখান, রহমতগঞ্জ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বন্দর, শুলকবহর, কুঞ্জছায়া, মুরাদপুর ও কাজীর দেউড়ি এলাকায় বসবাসরত দশজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় যাদের আটজনই পুরুষ। তারা সকলেই করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তাদের বয়স ২২ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। এদের পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। অন্যরা বাসায় চিকিৎসা নেন।

গবেষণাটি পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদীপ দাশ, ডা. প্রাণেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী। সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নির্দেশনায় এ গবেষণা চালানো হয় বলে গতকাল সোমবার সিভাসু থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

বলা হয়, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন করে এ গবেষণা কার্যক্রম চালানো হয়। গবেষণার অংশ হিসেবে ঝঅজঝ-ঈড়ঠ-২ বা নোভেল করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স বা জীবন রহস্য উন্মোচন করার জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) ১০টি নমুনা পাঠানো হয়। বিসিএসআইআর-এর দুইজন গবেষক ড. মো. সেলিম খান ও ড. মো. মোরশেদ হাসান সরকার এ গবেষণায় যোগ দেন। ফলাফলে দেখা যায়, দশটি নমুনার মধ্যে ছয়টিতে করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্যের ধরনের (ই.১.১.৭) উপস্থিতি রয়েছে এবং তিনটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন (ই.১.৩৫১) রয়েছে।

সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ জানান, দেশে করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ভাইরাসটির অন্য কোনো ধরণ ছিল কি-না, সে জন্যই এ গবেষণা চালানো হয়। আশঙ্কাও ঠিক মিলেছে।  এক্ষেত্রে আরও বেশি নমুনা থেকে ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স করলে প্রকৃত চিত্রটি স্পষ্ট হত।

আরো সংবাদ