স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

সুপারসনিক বিমান : সাড়ে তিন ঘণ্টায় নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে

যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ সেবা সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির (সুপারসনিক) উড়োজাহাজ কেনার পরিকল্পনা করছে। ২০২৯ সালের মধ্যে দেশটির কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ডেনভারের উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ‘বুম’ থেকে ১৫ টি সুপারসনিক উড়োজাহাজ কেনা হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স।

প্রতি সেকেন্ডে শব্দের গতি ৩৩০.৪ মিটার। একটি সাধারণ সুপারসনিক বিমানের গতি শব্দের প্রায় দ্বিগুন—সেকেন্ডে ৬৬০ মিটার।

সেই হিসেবে একটি সাধারণ জেট উড়োজাহাজের সর্বোচ্চ গতি যেখানে হয় ঘণ্টায় ৫৬০ এমপিএইচ, সেখানে একটি সুপারসনিক উড়োজাহাজের গতি ঘণ্টায় ১ হাজার ১২২ এমপিএইচ।

এই গতিতে যাত্রার সময়সীমা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। সেই হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যেতে সময় লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টা আর সান ফ্রান্সিসকো থেকে জাপানের রাজধানী টোকিওতে যেতে লাগবে মাত্র ছয় ঘণ্টা।

বিশ্বে প্রথম সুপারসনিক উড়োজাহাজ চালু করেছিল ফ্রান্স, ১৯৭৬ সালে। ফ্রান্সের ওই সুপারসনিক উড়োজাহাজের নাম কনকর্ড। শব্দদূষণ ও অতিরিক্ত জ্বালানী ব্যয়ের কারণে ২০০৩ সালের পর থেকে সেই উড়োজাহাজগুলো আর ব্যবহার হচ্ছে না।

ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তাদের চাহিদা অনুযায়ী নিরাপত্তা, চলাচল ও উড়োজাহাজগুলোর টিকে থাকার শর্তগুলো পূরণ হলে তবেই তারা বুমের ওভারট্যুর নামের সুপারসনিক উড়োজাহাজগুলো কিনবে। 

বুমের শীর্ষ বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ক্যাথি স্যাভিট বিবিসিকে বলেন, ‘শব্দের ব্যাপারটি আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। আমাদের সুপারসনিক বিমানগুলো সাধারণ জেট উড়োজাহাজের চেয়ে খুব বেশি শব্দ করে না।’

‘আর জ্বালানীর প্রসঙ্গে আমরা বলব, সুপারসনিক উড়োজাহাজ ওড়াতে হলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার প্রচুর জ্বালানীর প্রয়োজন হবে। তবে আমরা চেষ্টা করেছি কার্বন নিঃস্বরণ সর্বনিম্ন পর্যায়ের রাখার।’

তবে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এই উড়োজাহাজের অতিরিক্ত ব্যায়ের ব্যাপারটি সামনে এনে বলেছেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরও বাস্তববাদী হওয়া প্রয়োজন।

দেশটির উড়োজাহাজ বিশেষজ্ঞ মিশেল মেরলুজিও বিবিসিকে বলেন, ‘নতুন এই বাণিজ্যিক উড়োজাহাজগুলোর প্রতিটির নির্মাণ থেকে শুরু করে চলাচলের অনুমতি পেতে এক থেকে দেড় হাজার কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘এটি একটি দারুণ ব্যাপার, কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমার মতে, আর একটু বাস্তবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।’

তার মতে ২০২৯ সালের পরিবর্তে কয়েক বছর পর, ২০৩৫ বা ২০৪০ সাল থেকে এই ধরনের বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর কথা চিন্তা করা উচিত যুক্তরাষ্ট্রের।

সূত্র: বিবিসি

আরো সংবাদ