স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

দেশে রেকর্ড ৪৫.৪৬ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ

ক‌রোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় (রিজার্ভ) একের পর এক রেকর্ড গড়‌ছে। এখন দে‌শে রিজার্ভ প্রায় ৪৫ দশ‌মিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব‌শেষ গত ১৭ জুন দে‌শের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশ‌মিক ৪৬ বি‌লিয়ন বা প্রায় চার হাজার ৫৪৬ কোটি ডলার। বাংলা‌দে‌শি মুদ্রায় যার প‌রিমাণ তিন লাখ ৮৬ হাজার কো‌টি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুদ এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে ১১ মাসের বে‌শি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

এ‌দি‌কে চল‌তি অর্থবছ‌রে (১৭ জুন পর্যন্ত) অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি রিজার্ভ ২৬.১৫ শতাংশ বা ৯.৪২ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছ‌রের শুরুতে অর্থাৎ ৩০ জুন যা ছিল ৩৬.০৩ বিলিয়ন ডলার।

‌কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বল‌ছে, চল‌তি বছ‌রের ৩ মে দে‌শের রিজার্ভ প্রথমবা‌রের মতো ৪৫ বি‌লিয়ন ডলার অ‌তিক্রম ক‌রে। ওইদিন রিজার্ভ বে‌ড়ে দাঁড়ায় ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়া‌রি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৪.০২ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪০২ কোটি ডলার ছাড়ি‌য়ে‌ছিল। তারও আগে ৩০ ডি‌সেম্বর রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার, ১৫ ডি‌সেম্বর ৪২ মি‌লিয়ন ডলার এবং ২৮ অক্টোবর রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল।
বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রথম ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ২০২০ সালের অক্টোবরে। এরপর ধারাবাহিক বেড়ে গত ডিসেম্বরে ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।   

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম বার্ষিক রিপোর্ট ১৯৭১-১৯৭৩ এর ৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে  ‘স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরপর বাংলাদেশের কোনো বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় ছিল না। কিন্তু ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ আস্তে আস্তে তার বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় করে নিয়েছে। ১৯৭২ সালের ৩০ জুন বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় ছিল ১১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ১৯৭৩ সালের ২৯ জুনে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।’

চল্লিশ বছর আগে ১৯৮১-৮২ সালে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ছিল সর্বনিম্ন ১২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার, যা একমাসের আমদানি ব্যয়ের চেয়েও কম ছিল।

এরপর ১৯৯১-৯২ অর্থবছর শেষে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলার অতিক্রম করে ১ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে উঠে। ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে তা ২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে তা বেড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।

১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর শেষে তা কমে ২ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে তা আরও কমে ১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শেষ দিকে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করে।
রিজার্ভ ১০০ কোটি ডলারের নিচে নামলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে এমন শঙ্কায় ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাকি রাখতে বাধ্য হয়।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইরান ও মালদ্বীপ- এ নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এ দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ ক‌রে থা‌কে। আকুর বিল প‌রি‌শোধ কর‌লে রিজার্ভ কিছুটা ক‌মে যা‌য়।

রিজার্ভের একের পর এক মাইলফলক অতিক্রম করা পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। মাঝে মধ্যে হোঁচটও খেতে হয়েছে। আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বাড়লে সরকারের সাফল্য হিসেবে প্রচার করা হয়। এই রিজার্ভ অনেক সময় রাজনীতিতেও ইস্যু হয়েছে। রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় গভর্নরের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছে আতিউর রহমানকে।

বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বর্তমানে যে অবস্থায় আছে এটাকে খুবই আশাব্যাঞ্জন বা ভালো উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর ব‌লেন, এক দিনেই রিজার্ভ এ অবস্থান আসেনি। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন ৮৮ সাল পর্যন্ত রিজার্ভ এক বিলিয়ন ডলারের নিচে ছিল। এরপর থেকেই ঘুরে দাঁড়ায়। বর্তমানে ৪৫ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এটা খুবই ভালো। আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি ও আমদানি ব্যয় কম হওয়ায় রিজার্ভ বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে বলতে আশাব্যাঞ্জন দিক। এ রিজার্ভ দিয়ে ১১ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা যাবে। যা স্থিতিশীল অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) দেশে ২ হাজার ২৮৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৯৪ হাজার ১১৪ কোটি টাকা)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি বাংলাদেশে।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৬৩৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে ১১ মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ।    

দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে তা আরও কমে ১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শেষ দিকে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করে।
রিজার্ভ ১০০ কোটি ডলারের নিচে নামলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে এমন শঙ্কায় ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাকি রাখতে বাধ্য হয়।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইরান ও মালদ্বীপ- এ নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এ দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ ক‌রে থা‌কে। আকুর বিল প‌রি‌শোধ কর‌লে রিজার্ভ কিছুটা ক‌মে যা‌য়।

রিজার্ভের একের পর এক মাইলফলক অতিক্রম করা পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। মাঝে মধ্যে হোঁচটও খেতে হয়েছে। আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বাড়লে সরকারের সাফল্য হিসেবে প্রচার করা হয়। এই রিজার্ভ অনেক সময় রাজনীতিতেও ইস্যু হয়েছে। রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় গভর্নরের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছে আতিউর রহমানকে।

বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বর্তমানে যে অবস্থায় আছে এটাকে খুবই আশাব্যাঞ্জন বা ভালো উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর ব‌লেন, এক দিনেই রিজার্ভ এ অবস্থান আসেনি। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন ৮৮ সাল পর্যন্ত রিজার্ভ এক বিলিয়ন ডলারের নিচে ছিল। এরপর থেকেই ঘুরে দাঁড়ায়। বর্তমানে ৪৫ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এটা খুবই ভালো। আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি ও আমদানি ব্যয় কম হওয়ায় রিজার্ভ বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে বলতে আশাব্যাঞ্জন দিক। এ রিজার্ভ দিয়ে ১১ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা যাবে। যা স্থিতিশীল অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) দেশে ২ হাজার ২৮৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৯৪ হাজার ১১৪ কোটি টাকা)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি বাংলাদেশে।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৬৩৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে ১১ মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ।    

আরো সংবাদ