স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে যাত্রীদের দুর্দশা, সকালের ফ্লাইট ধরতে পৌঁছাতে হয় রাতে

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের আরব আমিরাতপ্রবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়; পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষাসহ নানা নিয়মনীতির ফাঁদে পড়ে । ফ্লাইট ছাড়ার আট থেকে দশ ঘন্টা আগেই প্রত্যেক যাত্রীকে বিমানবন্দরে পৌঁছে যেতে হচ্ছে।যদিও রিক্রুট এজেন্সিগুলো ৮ ঘন্টা আগে যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছে।যাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ার আশঙ্কায় আরও আগে বিমানবন্দরে পৌঁছে অপেক্ষা করছেন। গত ৩ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে চালু হয় পিসিআর ল্যাব। ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় এক মাসে ৭ হাজার ৯৯৬ জন প্রবাসীর করোনা পরীক্ষা হয়েছে বিমানবন্দরের ল্যাবে। এতে ৫৩৩ জনের শরীরে পাওয়া গেছে করোনার ভাইরাস।

আবুধাবি-দুবাই-শারজাহগামী সব যাত্রীকেই অপেক্ষায় বসে থাকতে হচ্ছে সকাল থেকে রাত অবধি। এর মধ্যে এসেছে আরেক আপদ। যাত্রাকালের ৪৮ ঘণ্টা আগে নেগেটিভ নিয়েও যাত্রার ৬ ঘণ্টা আগে পজিটিভ হচ্ছেন অনেক যাত্রী। তাদের মধ্যে প্রবাসী কর্মী ও ভ্রমণকারীই বেশি। সব প্রস্তুতি নিয়েও শেষ মুহূর্তে করোনা পজিটিভ হওয়ায় এসব যাত্রীর ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। এতে তাদের অনেকের আমিরাতযাত্রা পড়ছে অনিশ্চয়তায়।

আরব আমিরাত সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রবাসী কর্মীসহ সব যাত্রীকে ফ্লাইটের ৪৮ ঘণ্টা আগে একবার এবং ৬ ঘণ্টা আগে আরেকবার বাধ্যতামূলক করোনার নমুনা পরীক্ষা করাতে হয়।
রিপোর্ট পজিটিভ হলে যাত্রা বাতিল করে তাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় যাত্রীরা যাত্রাকালে বাসায় কিংবা রাস্তাঘাটে পরিবার, স্বজন, বন্ধু ও গণপরিবহনে মানুষের সঙ্গে মেশার কারণে সংক্রমিত হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। জানা গেছে, বিমানবন্দরে করোনা পিসিআর ল্যাব পরীক্ষার স্যাম্পল দেওয়ার তিন ঘন্টা পর পাওয়া যায় সেই রিপোর্ট। যা ফ্লাইট সিডিউলের দুই ঘন্টা আগে থেকেই যাত্রীদের হাতে দেওয়া হয়। পিসিআর ল্যাব টেস্ট দেওয়ার আগে প্রবাসী কল্যাণ বুথে নাম ঠিকানা এন্ট্রি করতে হয়।ফ্লাইট সিডিউলের আরও এক থেকে দুই ঘন্টা আগেই দাঁড়াতে হয় বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে।

ট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর ঘুরে দেখা গেল, প্রয়োজনীয় ও আনুষঙ্গিক কাজের ফাঁদে পড়ে আবুধাবি-দুবাই-শারজাহ প্রবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে অন্য দেশের যাত্রীদের এসব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না। শুধুমাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিধিনিধেষের কারণে এমন বিপর্যয়ে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনটি বিমানবন্দরে সপ্তাহে ১৯টি ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা ল্যাব চালুর পর থেকেই দেশি-বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। সপ্তাহে সাতদিন পুরোদমে এয়ার এরাবিয়া যাত্রী পরিবহন শুরু করেছে। ফ্লাই দুবাই সপ্তাহে ছয়টি এবং বাংলাদেশ বিমান সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বর্তমানে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন খান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, পিসিআর ল্যাব পরীক্ষার জন্য একটু আগেই আসতে হচ্ছে যাত্রীদের। এছাড়া প্রবাসী কল্যাণের কাজও রয়েছে। আবার অনেক সময় সার্ভার স্লো থাকে। যে কোনো যান্ত্রিক সমস্যা থাকতে পারে। সবমিলিয়ে কিছু সময় হাতে রেখেই যাত্রীরা আগেভাগে বিমানবন্দরে আসছেন।
শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জয়নাল আবেদীন শরীফ বলেন, গত ৩ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে চালু হয় পিসিআর ল্যাব। ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭ হাজার ৯৯৬ জন প্রবাসীকে পরীক্ষা করে ৫৩৩ জনের শরীরে পাওয়া গেছে করোনাভাইরাস। তাদেরকে ১৪ দিনের হোক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছিল। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন করোনারোগী পাওয়া যাচ্ছে।

আরো সংবাদ