স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের অতীত জীবনের কিছু স্মৃতি

যাঁর উত্থানের নেপথ্যে রয়েছেন সহধর্মিণী তাহমিনা রহমান

দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের জন্মদিন আজ ১২ মার্চ। জন্মদিন নিয়ে সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের অতীত জীবনের কিছু স্মৃতি তিনি তুলে ধরেন। এই স্মৃতি ঘিরে রয়েছেন তাঁর সহধর্মিণী। তাঁর উত্থানের নেপথ্যে ছিলেন যিনি।

সুফি মিজান বলেন, আমার স্ত্রী আমার দূর সম্পর্কের আত্মীয় হয়। খুব ছোট বেলায় তাকে দেখেছিলাম। দীর্ঘ কয়েক বছর পর একদিন তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাই। ১৯৬৫ সালে তাকে বড় হওয়ার পর আমি প্রথম দেখি। সে বেশ বড় হয়েছে, দেখতেও খুব সুন্দরী। তাঁর নাম তাহমিনা রহমান। প্রথম দেখাতেই তাকে আমার ভালো লেগে যায়। মনে মনে ভাবতে থাকি বিয়ে করলে এ মেয়েকেই বিয়ে করবো। তার বাবার পরিবার ছিল নিন্ম মধ্যবিত্ত শ্রেণির। আমারাও একই ছিলাম। কিন্তু তারা অনেক ভাই-বোন ছিল। যেহেতু আমি পড়ালেখা করেছি আমার বাবার ইচ্ছে ছিল আমাকে বড় ঘরের একটি মেয়ে বিয়ে করাবেন। কিন্তু আমিতো তাকে দেখার পরই মনে মনে ঠিক করে নিয়েছি এই মেয়েকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না। বাবা এবং পরিবারের অন্যদের অনেক কষ্টে বুঝাই। তখন আমি পড়ালেখার পাশাপাশি চট্টগ্রামের লালদিঘির পাড়ে বর্তমানে যেখানে সোনালী ব্যাংক সেখানে তখন ছিল ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। যেখানে আমি চাকরি করতাম। সেখানে এমদাত মিয়া নামের একজন বয়স্ক পিয়ন চাকরি করতো। তিনি আবার আমাকে খুব স্নেহ করতেন। চাচার বাড়ি ছিল ফটিকছড়ি। একদিন চাচা আমাকে বলেন, বাবা, আমাদের এলাকায় জুনির বাপের মসজিদ নামে একটি মসজিদ আছে। এ মসজিদে মনে কোন আশা নিয়ে তিন সপ্তাহ জুমার নামাজ পড়লে সেই মনের আশা আল্লাহ পূরণ করেন। তখন আবার শুক্রবারেও অফিস খোলা থাকতো। আমি চাচা থেকে কথাটি শুনে সেই মাসেই ছুটি নিয়ে শহর থেকে সেখানে গিয়ে শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়ি। এভাবে দুই শুক্রবার পড়ার পর শেষ শুক্রবার যাওয়ার সময় খুব ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। মসজিদে যাওয়ার পথে রাস্তায় বুক সমান পানিও উঠে যায়। আমি খুব কষ্ট করে সাঁতরিয়ে সেই পানি ভেঙে পৌঁছে মসজিদে নামাজ আদায় করি। আলহামদুল্লিলাহ, ১৯৬৭ সালের ৪ জুলাই মাত্র ১০ আনার একটা স্বর্ণের চেইন সাথে গোল্ডপ্লেটের দুই জোড়া চুড়ি দিয়ে আমাদের বিয়ে হয়। কিন্তু চুড়ি জোড়া যে স্বর্ণ না এটা তারা জানতো না। আমি বিয়ের পর তাকে সেটা বলে দিই। সে তখন আমাকে উত্তর দেয়, আমি যে তোমাকে পেয়েছি এটাই আমার জন্য অনেক। আমি আর কিছু চাই না। বিয়ের পর সেই-ই আমার সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে উঠে। নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে তার ভালোবাসা আর সহযোগিতায় আজকে আমি এ জায়গায় এসেছি। আমি তারে এখনো সেই প্রথম দিনের মত ভালোবাসি। আমার বর্তমান অবস্থানে পৌঁছার নেপথ্যে তাঁর অবদান কোন অংশে কম নয়।

আরো সংবাদ