স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

এবার হজে কারা যেতে পারবেন

এ বছর যারা হজে যেতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। করোনার কারণে গত দুই বছর বিদেশিদের হজে যাওয়া বন্ধ ছিল। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় ১৯৫৭ সালের ১ জুলাইয়ের পরে যাদের জন্ম, তারাই কেবল বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন।

চলতি বছর হজে গমনেচ্ছু এবং সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কোভিড পরিস্থিতি বিশ্বের সব দেশে এখনো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। এ অবস্থায় চলতি বছর বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং স্বল্পতম সময়ের প্রস্তুতিতে হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে হজ অনুষ্ঠানে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জুলাই সৌদিতে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন। স্বল্প সময়ের মধ্যে এবারের হজের জন্য নতুনভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে ভিসা আবেদন করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে । হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি এবং হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবার অবগতি এবং প্রস্তুতি গ্রহণের লক্ষ্যে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো- 

চলতি বছরে ৬৫ বছরের (পাসপোর্ট অনুযায়ী যাদের জন্ম তারিখ ১৯৫৭ সালের ১ জুলাই এবং পরবর্তী সময়ে) কম বয়সী ব্যক্তিই কেবল হজ পালনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

২০২০ সালের সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রী চলতি বছর হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

২০২০ সালে নিবন্ধিত ৬৫ বছরের বেশি (পাসপোর্ট অনুযায়ী যাদের জন্ম তারিখ ১৯৫৭ সালের ৩০ জুন বা এর আগে) বয়সী হজযাত্রী বা নিবন্ধন করার পর মারা গেছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ হজে যেতে আগ্রহী হলে তিনি ওই শূন্য কোটায় অগ্রাধিকার পাবেন। সরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে হজ অফিসের পরিচালকের কাছে অনতিবিলম্বে বদলি হজযাত্রীরা পাসপোর্টসহ আবেদন করবেন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগ্রহীরা নিজ নিজ হজ এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। উভয় ক্ষেত্রেই, প্রস্তাবিত ব্যক্তির প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।

২০২০ সালে নিবন্ধিত সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা ২০২২ সালে হজ প্যাকেজ ঘোষণার তিন কার্যদিবসের মধ্যে যে কোনো নিবন্ধন কেন্দ্র থেকে প্যাকেজ স্থানান্তর সম্পন্ন করবেন। এজন্য ২০২০ সালে পরিশোধিত প্যাকেজ মূল্য সমন্বয় করে ২০২২ সালের যে কোনো একটি প্যাকেজের অবশিষ্ট অর্থ ভাউচারের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে জমা করতে হবে। 

প্যাকেজ স্থানান্তর/নিবন্ধনের তিন দিনের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের পাসপোর্ট নিজ দায়িত্বে ঢাকার হজ অফিসে জমা দিতে হবে।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ২০২০ সালে নিবন্ধিত হজযাত্রীরা নিজ নিজ এজেন্সি ঘোষিত প্যাকেজ (সরকারি ব্যবস্থাপনার সর্বনিম্ন প্যাকেজের নিচে নয়) দ্রুত নির্ধারণ ও অবশিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে এজেন্সির সহায়তায় হজে যাওয়ার কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।

নিবন্ধন নিশ্চিত করতে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীরা পাসপোর্টের মেয়াদ যাচাই করে কমপক্ষে আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদযুক্ত পাসপোর্ট প্রস্তুত রাখবেন। যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা নতুন করে পাসপোর্ট করতে হবে, তারা অতীব জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট করবেন।

হজের সময়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি স্থানে গ্রুপভিত্তিক চলাচল করতে হবে। হজের সফরের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের প্রবর্তিত নিয়ম অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

কোভিড ভ্যাকসিন এবং ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গ্রহণ করে টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট হজের পুরো সফরে ব্যবহারের লক্ষ্যে একাধিক কপি/আইডি কার্ড আকারে লেমিনেট কপি প্রস্তুত রাখতে হবে।

নিবন্ধন ছাড়া কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে থাকলে বা ‘সুরক্ষা’ অ্যাপে টিকা নেওয়ার তথ্য আপডেট নেই- এমন হজযাত্রীকে টিকা গ্রহণের তথ্য ‘সুরক্ষা’ অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করে টিকার সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র টিকা গ্রহণ করলেই হবে না, টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেটও সঙ্গে নিতে হবে।

হজে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড পরিক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিতে হবে বলেও নির্দেশনায় জানিয়ে দেওয়া হয়।

হজযাত্রীরা নিয়মিত সেবন করেন- এমন কোন ওষুধ সৌদি আরবে নেওয়ার প্রয়োজন থাকলে তা অবশ্যই রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের বা হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র সঙ্গে করে লাগেজে বহন করবেন। কোনো প্রকার ব্যবস্থাপত্র বিহীন ওষুধ সঙ্গে নেওয়া যাবে না।

হজযাত্রী, গাইড বা সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি জর্দা, গুলসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য সঙ্গে নিতে পারবেন না।

সৌদি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী হজ শেষে ফেরার সময় ৬০ হাজার সৌদি রিয়ালের বেশি নগদ অর্থ বা সমমূল্যের স্বর্ণালঙ্কার বা মূল্যবান কোনো দ্রব্যাদি বহন করলে ওই যাত্রীকে সৌদি স্থানীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। একই সঙ্গে মূল্যবান দ্রব্যাদি কেনার ইলেক্ট্রিক্যাল ভাউচার দেখাতে হবে।

আরো সংবাদ