স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

মোদির হঠাৎ লাদাখ সফর কীসের বার্তা?

চীনের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই হঠাৎ লাদাখ সফরে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অবস্থিত ভারতীয় বাহিনীর সীমান্ত চৌকি পরিদর্শন করেছেন। সীমান্তে মোতায়েন সেনা সদস্যের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর এই আচমকা সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেজ্ঞরা।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, তিন বাহিনীর প্রধান সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং স্থলবাহিনীর প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণেকে নিয়ে শুক্রবার স্থানীয় সময় ১০টার দিকে লেহ সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করেন মোদি।

এলএসিতে ভারতীয় বাহিনীর যে সব সীমান্ত চৌকি রয়েছে, সেগুলোর কয়েকটিতে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন এবং সীমান্তে মোতায়েন সেনাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

১৫ জুন রাতে গালওয়ানের সংঘর্ষে যে সেনারা আহত হয়েছিলেন, তাদের সঙ্গেও মোদি ইতিমধ্যেই লেহতে দেখা করেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর দফতর বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, কারোর পক্ষ থেকেই আগে জানানো হয়নি যে, মোদি নিজে আজ লাদাখ যেতে পারেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের লাদাখ সফরের কথা ছিল। সে সফর শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়। কেন বাতিল, স্পষ্ট জানায়নি দিল্লি।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন, চীনের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে বলেই রাজনাথের সফর স্থগিত করা হয়েছে। ভারত যে এখন সংঘাত চাইছে না, বরং পরিস্থিতি প্রশমিত হয়ে এলে সামরিক তৎপরতা কমানোই যে ভারতের লক্ষ্য, রাজনাথের সফর স্থগিত করে সেই বার্তাই দেয়া হলো বলে কেউ কেউ ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।

কিন্তু শুক্রবার সকালে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আরও অনেক বড় বার্তা চীনকে দেয়ার ছিল বলেই বৃহস্পতিবার রাজনাথের সফর স্থগিত হয়েছিল।

ফলে মোদির আচমকা লাদাখ পৌঁছনোয় ভারতের কৌশলগত বার্তাই বদলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মোদির এই সীমান্ত সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর না হলে বা খুব বড় পদক্ষেপের কথা ভাবা না হলে প্রধানমন্ত্রী নিজে সীমান্ত চৌকিতে যান না।

তাই প্রধানমন্ত্রীর এই আচমকা সীমান্ত সফর বাহিনীর মনোবল অনেকটা বাড়িয়ে দেবে বলে দাবি করছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তারা।

আনন্দবাজার জানায়, ভারতের কূটনীতিক মহল বলছে, চীনের জন্যও এটা খুব বড় বার্তা। লাগাতার আলোচনা চললেও চীন এখনও বৈঠকে গৃহীত কোনো সিদ্ধান্তই মানেনি। এই ভাবে টানাপড়েন চালিয়ে যাওয়ার চীনা কৌশল যে ভারত বেশি দিন সহ্য করবে না, সীমান্তে মোদির পদার্পণ আজ সরাসরি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে সেই বার্তা দিয়ে দিল বলে ভারতীয় কূটনীতিকরা মনে করছেন

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর এলএসি সফর বুঝিয়ে দিল যে, ভারত এ বার যে কোনো পদক্ষেপের জন্য তৈরি, এমনও বলছেন দেশটির প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

আরো সংবাদ