স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

দলে আর কোনো সাহেদ আছে কি না, তা খুঁজছে আওয়ামী লীগ : ব্যারিস্টার বিপ্লব

করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের মতো আর কেউ আওয়ামী লীগে আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। শনিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে তিনি এ তথ্য জানান।

এর আগে গত ৬ ও ৭ জুলাই উত্তরায় সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের অফিসে অভিযান চালিয়ে কোভিড- ১৯ পরীক্ষার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার প্রমাণ পায় র‌্যাব। এই ঘটনায় ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর থেকে সাহেদ পলাতক ছিলেন।

নয় দিন পর গত বুধবার সাতক্ষীরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখন মামলার তদন্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন সাহেদ।

গ্রেপ্তারের আগে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। যদিও এখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সাহেদ আওয়ামী লীগের কোন পদে ছিলেন না।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রতারক সাহেদ তার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে গিয়ে টকশো করার সময় আমাদের সংগঠনের উপকমিটির পরিচিতি দিয়েছে। যদিও সে কোন পদে ছিল না। আমাদের দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এরপরও এটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। একদিনে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর প্রায় তিন দশক জুড়ে অগণতান্ত্রিক স্বৈরশক্তি বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। এবং তারা দল গঠন করার জন্য বিভিন্ন দলের মানুষকে লোভ-লালসা দেখিয়েছে, টাকা দিয়ে কিনে তারা দল ভারী করেছে। সেই রাজনীতির ধারাটি এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে রয়েছে।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে, সরকার থেকে এবং রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি মুলোৎপাঠন করার জন্য সংকল্প করেছেন। আজকে যে প্রতারক সাহেদের কথা বলা হচ্ছে, গণমাধ্যম তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেনি এবং কোন গণমাধ্যম তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়নি। অন্য কোন রাজনৈতিক দলও তাকে গ্রেপ্তার বা তার প্রতারণার বিষয় তুলে ধরেনি। র‌্যাব তদন্ত করে এটি বের করেছে। এবং সরকারের নিরদেশে তাকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে এবং বিচারের আওতায় এনেছে।

দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন প্রক্রিয়ায় সাহেদ যুক্ত ছিলেন না জানিয়ে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রতারক সাহেদ নিজের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য, অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে ছবি তুলেছে। দলীয় কোন মিটিংয়ে, ফরমাল কোন মিটিংয়ে প্রতারক সাহেদকে আমি দেখিনি। গণমাধ্যমও কোন ছবি দেখাতে পারবে না, সে দলীয় ফোরামে কোন দায়িত্বশীল নেতার সাথে বসে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ছিল। আমাদের নেতারা বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য গিয়েছেন, সেখানে চলতে, ফিরতে, বসতে যখন দাঁড়িয়েছিলেন সে সময়মতো সুযোগ নিয়ে এই ছবি তুলেছে।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমরা খতিয়ে দেখছি সাহেদ কিভাবে আমাদের দলের নাম ভাঙানোর সুযোগ পেয়েছে। আমাদের দলে এ ধরনের পন্থায় আরও কোন সাহেদ রয়েছে কিনা অবশ্যই সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদেরকে সে নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি, করে যাচ্ছি। যারা এই অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের জন্য, নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে বা আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আমরা বলেছি। দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়াও আমরা শুরু করেছি। সে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

আরো সংবাদ