স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

এদেশের মতো সাংবাদিক সহায়তা উপমহাদেশে বিরল : তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনাকালে বাংলাদেশে যেভাবে সাংবাদিকদের সহায়তা করা হচ্ছে, ভারত-পাকিস্তানসহ উপমহাদেশের কোথাও এমন উদাহরণ নেই।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং যেভাবে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের করোনাকালীন সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা আশপাশের কোন দেশে দেয়া হচ্ছে না। ভারতে দেয়া হচ্ছে না, নেপালে দেয়া হচ্ছে না, পাকিস্তানেও দেয়া হচ্ছে না।”

মন্ত্রী আজ বুধবার (২৯ জুলাই) যশোর সার্কিট হাউজ সভাকক্ষে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে খুলানা বিভাগের ৯ জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে একথা বলেন।

তিনি বলেন, “৩০ জুন বাজেট পাশের দিন আমার পিএস ফোনে জানালো সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের যে টাকা দিতে বলেছিলেন সে টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করছে না। আপনাকে অর্থমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে হবে। আমি পার্লামেন্টেই অর্থমন্ত্রীর কাছে ছুটে যাই এবং টাকাটা ছাড় করে দেয়ার ব্যবস্থা করি।”

প্রাথমিকভাবে এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে আবারও দেয়া হবে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার সকলের। যারা সব সময় সরকারের সমালোচনা করে সেই সাংবাদিকদেরও সহায়তা দেয়া হবে।’

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক নেতা-কর্মী, এমপি, মন্ত্রী মারা গেছেন। আর ঘরে বসে বিএনপির নেতারা টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে মুখ দেখাচ্ছে। তারা মানুষের পাশে নেই।

তিনি বলেন, অনেক ধনী দেশে করোনাকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল এবং সেই দেশগুলোতে এখনো মৃত্যুর মিছিল চলছে। পৃথিবীর কোন জায়গা এই ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকেনি। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে করোনা থেকে মুক্ত রাখতে যতটুকু সম্ভব সেটি করার চেষ্টা করে আসছেন।

মন্ত্রী বলেন, “করোনাকালে একদিনও ঘরে বসে থাকিনি। মন্ত্রী, এমপি, জাতীয় নেতা অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। যেকোন সময় করোনায় আক্রান্ত হতে পারি এবং তাতে মৃত্যুও হতে পারে।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ২ জন সদস্য, মন্ত্রী, সংসদ সদস্যেরও মৃত্যু হয়েছে। তাই বলে আমরা কেউ ঘরে বসে থাকিনি। হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকার শিক্ষা আমাদের নেত্রী আমাদের দেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৪ বছর বয়সে একদিনের জন্যেও বসে থাকেননি। তিনি মানুষের জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আর বিএনপির নেতারা টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে কথা বলেন। জনগণের পাশে তারা নেই।”

তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হাজী মকবুল মৃত্যুবরণ করার ১০ দিন আগেও ত্রাণ বিতরণ করেছেন। এভাবে আরো অনেক নেতা, ধর্মমন্ত্রী শেখ মোহম্মদ আব্দুল্লাহ, সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমসহ অনেকেই মানুষের জন্যে কাজ করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরাও সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকরা জীবনটাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে কাজ করছেন। এ জন্যে তাদেরকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান তিনি।

মন্ত্রী গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম কর্মিদের সরকারের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার যে পরিবর্তন হয়েছে তা কোন জাদুর কারণে নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে। শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নেতা নন তিনি বিশ্বের কাছেও অনুকরণীয় নেতৃত্বের উদাহরণ। তিনি সংবাদপত্র মালিকদের অসুবিধা সাংবাদিকদের সাথে ভাগ করে নেয়ার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহামুদ, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মিলন রহমান।

যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার ৩৩৮ জন সাংবাদিকের মাঝে এই চেক বিতরণ করা হয়।

আরো সংবাদ