স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

চকরিয়ার ওসি ও হারবাংয়ের আইসির বিরুদ্ধে পটিয়ায় হত্যা মামলা

মো. জাফর (৩৫) নামের এক প্রবাসীকে পটিয়া থেকে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান ও হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে পটিয়া আদালতে মামলা হয়েছে।

রোববার পটিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বেশ্বর সিংহের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত জাফরের মামা ও বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আহমদ নবী।

শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে চট্টগ্রামে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত ২৯ জুলাই সকালে পটিয়ার কচুয়াই এলাকার বাড়ি থেকে জাফরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩১ জুলাই রাতে প্রবাসী জাফরকে ‘ক্রসফায়ারের’ নামে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলামকে। দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমানকে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্যকেও আসামি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের কথা মৌজা গ্রামের মো. আবদুল আজিজের পুত্র মো. জাফর দীর্ঘদিন ধরে ওমান প্রবাসে ছিলেন। দেশে করোনাভাইরাস শুরুর আগে ওমান থেকে জাফর দেশে ফিরেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে জাফর আর বিদেশে যেতে পারেনি। গত ২৯ জুলাই রাতে ওমান প্রবাসী জাফরকে পটিয়ার বাড়ি থেকে সাদা পোশাকধারী কিছু ব্যক্তি তুলে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ওই প্রবাসীর কাছ থেকে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু প্রবাসীর পরিবার ওই টাকা দিতে পারেননি। ফলে ২ দিন পর প্রবাসীর পরিবারের কাছে চকরিয়া থানা পুলিশ ফোন করে জাফরের লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য সংবাদ দেন। প্রবাসীর পরিবার ও আত্মীয়স্বজন চকরিয়া থানা থেকে লাশ গ্রহণ করে গত ৩১ জুলাই পটিয়ায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন।

বাদীর পক্ষের আইনজীবি নূর মিয়া বলেন, ক্রসফায়ারের নামে ওমান প্রবাসীকে চকরিয়ায় নিয়ে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

একইদিন পটিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. হাসানকেও চকরিয়া থানা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। পরে ‘ক্রসফায়ারে’ তার মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। নিহত হাসান পৌরসভার পাইকপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র বলে পৌর কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিববুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ক্রসফায়ারের নামে কারও কাছে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়নি।

পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন বলেন, এসব বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। কখন কিভাবে প্রবাসী জাফরকে তার কচুয়াই এলাকা থেকে তুলে নিয়ে গেছে তা আমরা কিছুই জানি না।

আরো সংবাদ