স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

আমিরাতে করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলকে রাষ্ট্রদূতের আহ্বান

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে  রাষ্ট্রায়ত্ব আর্থিক প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাই (বিবিসি) এগিয়ে আসার আহ্বান জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবুজাফর।

গত রবিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় আবুধাবীস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হল রুমে প্রতিষ্ঠান দুটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবুজাফর ডাকা গোল টেবিল বৈঠকের এই আহ্বান জানান।

বৈঠকে রাষ্টদূত বলেন, কোভিড-১৯ পৃথিবীজুড়ে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে আনতে  আমাদের অনেক সময় লাগবে। এই ক্ষতি থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতও বাদ পড়েনি। বাংলাদেশের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ আমিরাতের সুসম্পর্ক রয়েছে। যার কারণে এই দেশে বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠী সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিভিন্ন পেশার সাথে নিয়োজিত আছে। তবে কথা হলো বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে আমিরাতে বাংলাদেশী প্রবাসীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে আমাদের সম্মিলিত কাজ করতে হবে।

যেমন : এই মহামারীকালীন সময়টিতে যে সকল প্রবাসী চাকরী হারিয়েছে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা। ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক সাপোর্ট খুবই প্রয়োজন। সেই ক্ষেত্রে জনতা ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে কার্যকরী ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। কারণ এইসব ব্যবসায়ীরা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করেন থাকে। অন্যদিকে করোনাকালীন সময়ে দেশটিতে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবি যারা অর্থের জন্য ভিসা নতুন করে লাগাতে পারছেনা। তাদের ভিসা লাগাতে যে অর্থ প্রয়োজন হয়। এই অর্থের যোগান দিতে জনতা ব্যাংক তাগিদদেন রাষ্ট্রদূত এবং সেই ক্ষেত্রে সরকার অনুমোদিত আমিরাতের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (বিবিসি) কে সমন্বয়ক হিসেবে রাখা যেতে পারে বলে ও তিনি জানান।

কারণ বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দীর্ঘদিন যাবৎ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য কাজ করে আসছে এবং এটি একটি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান তাই আমি বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দদের এই মহামারীতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। রাষ্ট্রদূত চলতি মাসের ১৩ আগস্ট বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাই আয়োজিত বিজনেস ডায়লগ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন স্কিল ওয়ার্কার তৈরিতে বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল কাজ করতে পারে। কারণ সাধারণ শ্রমিকের চেয়ে এই দেশে অভিজ্ঞ শ্রমিকের চাহিদা ও গুরুত্ব বেশি। তাই এই চাহিদা পূরণ করতে বাংলদেশ বিজনেস কাউন্সিল একটি কারিগরী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে পারে। প্রশিক্ষণ শেষে এইসব শিক্ষার্থীদের দেশের অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।

গোল টেবিলে বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাই এর প্রতিনিধিত্ব করেন সংগঠনটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আইয়ুব আলী বাবুল। তিনি আমিরাতে বাংলাদেশী ব্যবসা প্রসারে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুবাই আল আবার ফুড এন্ড ভেজিটেবল মার্কেটে প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়নের ব্যবসা হয়ে থাকে । সে ব্যবসায় বাংলাদেশীরা যদি পাঁচ থেকে দশ শতাংশ ব্যবসা করতে পারে। তাহলে সরকারের লক্ষ্য মাত্রা এখন থেকেই অর্জন করা সম্ভব। তবে সেই ক্ষেত্রে আমাদের তথা বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দীর্ঘদিনের একটি প্রস্তাব বাংলাদেশ আমিরাতের সাথে সরাসরি জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা। আর এইটা হলে আমরা প্রতিযোগিতামূলক এই মার্কেট থেকে আমাদের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। অন্যদিকে দেশ থেকে এইখানে যে কাঁচা সবজি সামগ্রী আমিরাতে আসে তাতে করে বিডম্বনায় খেসারত আমাদের দিতে হয়। সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সবজি মাঝ পথেই নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যা কাটিয়ে আমাদের অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতে এই কুলারস্টোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

গোল টেবিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নব নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবুজাফর, দুবাইতে নিয়োজিত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন খান, কমার্শিয়াল কাউন্সিলার কামরুল হাসান, আবুধাবি জনতা ব্যাংক  এর সিইও আমিরুল ইসলাম, আবুধাবি জনতা ব্যাংক শাখার ম্যানেজার আব্দুল হাই, দুবাই জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার আব্দুল মালেক, শারজাহ জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার মোহাম্মদ শওকত আকবর, বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাই এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আয়ুব আলী বাবুল ও দূতাবাসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

আরো সংবাদ