স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

খুলনায় মাদ্রাসা ছাত্র হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

খুলনায় মাদ্রাসা ছাত্র মুছা শিকদার (১৬) হত্যা মামলায় আদালত চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এছাড়া মামলার ৩৬৪ ধারায় প্রত্যেককে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার বেলা পৌঁনে ১২টায় খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বনি আমিন শিকদার (২০), রাহিম শেখ (২১), রাজু শিকদার (২০) ও নূহু শেখ (৩৫)। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতের খাবার খেয়ে রূপসা উপজেলার আলাইপুর গ্রামের মোস্তাকিন শিকদারের ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র মুছা শিকদার বাড়ির পাশে তাদের মুদি দোকানে ঘুমাতে যায়। পরের দিন সকালে তার পিতা মুস্তাকিন শিকদার দোকানে গিয়ে তাকে দেখতে না পেয়ে খুঁজতে থাকেন। সকাল ১০টার দিকে পাশর্শ্ববর্তী আঠারোবাকী নদী থেকে তার ভাসমান লাশ পুলিশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নিহত মুছার পিতা মুস্তাকিন শিকদার ২৭ সেটেম্বর বনি আমিন শিকদার, রাহিম শেখ, রাজু শিকদার ও নূহু শেখের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলাটি রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি উক্ত চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা সংস্থায় হস্তান্তর করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই মুক্ত রায় চৌধুরী ৩০ মে এজাহারভুক্ত আসামি বনি আমিন শিকদার, রাহিম শেখ, রাজু শিকদার, নূহু শেখ এবং অপর দুইজন জসিম শিকদার ও সিরাজ শিকদারকে আভিযুক্ত করে ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ২৪জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। আদালতে ১৬৪ ধারায় আসামি বনি আমিন শিকদার, রাহিম শেখ, রাজু শিকদার ও নূহু শেখ স্বীকারোক্তি জানায় মুদি দোকানে বাকি খাওয়া ও গুলতি নিয়ে বনি আমিন শিকদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে এই হত্যাকা- ঘটে। দ-প্রাপ্ত আসামিরা সকলেই আলাইপুর গ্রামের বাসিন্দা।

রায় ঘোষণার পর নিহত মাদ্রাসা ছাত্র মুছা শিকদারের পিতা মোস্তাকিন শিকদার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আসামিদের ফাঁসির রায় দেওয়ায় আমি খুশি হয়েছি। আমি অবিলম্বে এই রায়ের আদেশ কার্যকর চাই। তাহলে কেউ আর খুনের মতো অপরাধ করবে না’। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট এনামুল হক এবং এপিপি অ্যাডভোকেট এম ইলিয়াস খান ও অ্যাডভোকেট শাম্মি আক্তার। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফরহাদ আব্বাস ও অ্যাডভোকেট নিরঞ্জন কুমার ঘোষ।

আরো সংবাদ