স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

করোনার কারণে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে হুমকিতে ৮৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থান

কোভিড ১৯ মহামারিতে মানুষ প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ায় আগামী পাঁচ বছরে অন্তত ৮৫ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) জোর দিয়ে জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি বৈশ্বিক শ্রম বাজারজুড়ে বৈষম্যকে আরও গভীর করেছে।

তবে সংস্থাটি এটিও জানিয়েছে, নতুন এই সংকটের কারণে প্রায় ৯৭ মিলিয়ন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিরও সুযোগ রয়েছে। তবে তা নিশ্চিত করতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের উচিত চাহিদামাফিক শ্রমিকদের প্রস্তুত করা।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে, বৈশ্বিক বাজারে স্বয়ংক্রিয়তার সাথে সাথে মেশিন ও মানুষের শ্রম বিভাজন বেড়ে যাওয়ায় সারা বিশ্বে ৮৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ডব্লিউইএফ-এর ফিউচার অফ জবস রিপোর্ট ২০২০ এমন আশঙ্কা করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে দূরবর্তী অবস্থানে থেকে কাজ করার বিষয়টি ভবিষ্যতে প্রাধান্য পাবে, তাই শ্রমিকদের নতুন এই কর্ম প্রবণতার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সেভাবে ক্যারিয়ার এবং দক্ষতা গড়ার উপর জোর দিয়েছে ডব্লিউইএফ।

ডব্লিউইএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিয়া জাহিদি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “কোভিড-১৯ কাজের ভবিষ্যতকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাবে। মহামারীর কারণে হওয়া অর্থনৈতিক সংকট এর কারণে আরো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ডব্লিউইএফ-এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগ ডাটা এবং ই-কমার্সের উপর নির্ভরতা বাড়ার কারণে আগামী পাঁচ বছরে কর্মক্ষেত্রে নতুন এক প্রযুক্তিগত পর্যায় তৈরি হবে। তাই মহামারী-প্ররোচিত এই অর্থনৈতিক সংকট ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার চেয়েও খারাপ পর্যায়ে যেতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনার কারণে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা দ্রুত ডিজিটালাইজেশনের উপর মনোযোগ প্রদান করেছে। তাই এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে শ্রমিকদের পুনরায় প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৫০ শতাংশ শ্রমিককে নতুন করে এর জন্য দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

ফিউচার অফ জবসের একটি জরিপ ডব্লিউইএফের এই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই জরিপে প্রায় ৩০০ টি প্রথম সারির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামত নেয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অন্তত ৮০ লাখ কর্মী কাজ করে।

এই দুঃসংবাদের সাথে কিছু সুসংবাদও দিয়েছে সংস্থাটি। বলা হয়েছে, শ্রম বাজারে নতুন করে আরও ৯৭ মিলিয়ন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। প্রতিবেদনে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে “মানুষ, মেশিন এবং অ্যালগরিদমের মধ্যে শ্রম বিভাজন” করে নতুন এই কর্মসংস্থান গঠিত হবে।

কিন্তু শ্রম বাজারের এই পরিবর্তনে সবাই সমানভাবে উপকৃত হবে না বলে জানিয়েছে প্রতিবেদনটি। সেখানে সতর্ক করা হয়েছে যে নতুন কর্মক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের শ্রমিক, তরুণ, নারী এবং কম দক্ষ কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আরো সংবাদ