স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

ভাসানচরে পৌঁছাল ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা!

কক্সবাজারের উখিয়া থেকে নিয়ে আসা ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছেছে। নৌ এবং সেনাবাহিনীর সাতটি জাহাজে করে শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে তারা ভাসানচরে পৌঁছান।

উখিয়ার আশ্রয়শিবির থেকে বৃহস্পতিবার এই রোহিঙ্গাদের বাসে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছিল। চট্টগ্রাম থেকে মোট সাতটি জাহাজ তাদের নিয়ে শুক্রবার বেলা ২টায় ভাসানচরে ভেড়ে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ৩৯টি বাস উখিয়া কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা করে।image১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষ রাতে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। পতেঙ্গা বিএএফ শাহীন কলেজ মাঠ ও বোট ক্লাব এবং এর আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী ট্রানজিট শিবিরে তাদের রাখা হয়।

এদিকে গত বুধবার রাতে ১০টি গরু জবাই করে প্রস্তুত করা হয় সাড়ে ৩ হাজার মানুষের খাবার। সারা রাত রান্নার পর আজ শুক্রবারন সকাল থেকে শুরু হয় খাওয়া। গরুর মাংসকে বিশেষভাবে রান্না করা হয় বলে এটি মেজবানি মাংস বলে পরিচিত। পতেঙ্গায় খাওয়ানোর পাশাপাশি যাত্রাপথের জন্য বাক্সে করে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে খাবার দিয়ে দেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

এসব রোহিঙ্গাকে জাহাজে ওঠার পূর্বে বিভিন্ন ডাটা এন্ট্রি সাপেক্ষে বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণের টোকেন ও চাবি হস্তান্তর করা হবে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আধুনিক বাসস্থান ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সেখানে মহিষ, ভেড়া, হাঁস, কবুতর পালন করা হচ্ছে। আবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। পরীক্ষামূলকভাবে ধান চাষও করা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে যেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৬০ শরণার্থী বসবাস করতে পারেন সে লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ঘরের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪০টি।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে আগেই ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়েছিল। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলকে দেখার জন্য ভাসান চরে পাঠানো হয়। তারা ফেরার পর তাদের কথা শুনে রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসান চরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে বলে জানা গেছে।

আরো সংবাদ