স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

আল জাজিরার প্রতিবেদন : সামিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটির জন্য টেলিভিশন চ্যানেলটির ডিরেক্টর জেনারেল মোস্তেফা সৌগ, শায়েক জুলকারনাইন, নেত্র নিউজের প্রধান বার্তা সম্পাদক তাসনিম খলিল ও ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

আল-জাজিরার ওই প্রতিবেদনের প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আর প্রতিবেদনটি প্রচারের পরদিন সেটির প্রতিবাদ জানিয়ে আইএসপিআর যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছিল সেখানে প্রতিবেদনে সামি হিসাবে চিহ্নিত জুলকারনাইন সায়ের খান সম্পর্কে লেখা হয়েছিল তিনি মাদকাসক্তির অভিযোগে বাংলাদেশ সামরিক একাডেমি থেকে বহিষ্কৃত প্রাক্তন ক্যাডেট। তাসনিম খলিলের পরিচয় দেওয়া হয়েছিল তিনি ‌‘কুখ্যাত’ নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক।

আব্দুল মালেক নামে এক আইনজীবী আজ (বুধবার) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে এ মামলার আবেদন করেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে একই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের সুনাম নষ্ট করে আন্তর্জাতিকভাবে অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন। তারা যৌথভাবে ও অজ্ঞাত আসামিদেরকে দিয়ে ভুয়া তথ্য সংবলিত প্রতিবেদন তৈরি করে গত ১ ফেব্রুয়ারি ‘অল দি প্রাইম মিনিস্টার ম্যান’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে ইউটিউবে ব্যাপক প্রচার পায়, যা পরের দিন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও অনলাইনে প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করাসহ দেশ ও জাতির সুনাম হানি করেছে।

আলজাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে আগেই ‘মিথ্যা ও অবমাননাকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। ২ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একে লন্ডন ও অন্যান্য জায়গায় সক্রিয় উগ্রপন্থী ও তাদের সহযোগীদের উসকানিতে বেপরোয়া ও নোংরা অপপ্রচার বলে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার এটি প্রত্যাখ্যান করছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রতিবেদন একগুচ্ছ বিভ্রান্তিকর শ্লেষ আর বক্রোক্তি ছাড়া কিছুই নয়, যা আসলে চরমপন্থী গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু কুখ্যাত ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার।

আলজাজিরার ওই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরও (আইএসপিআর)। সোমবার আইএসপিআরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পেশাগতভাবে অত্যন্ত দক্ষ, সকলের কাছে অতি গ্রহণযোগ্য সেনাবাহিনী প্রধানকে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়া আল-জাজিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিকভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত করার অপপ্রয়াস।

আলজাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতেও বেশ আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের তরফ থেকে প্রতিবেদনটিকে ষড়যন্ত্রমূলক বলে দেখা হচ্ছে। দেশে আলজাজিরার সম্প্রচার বন্ধের দাবিও তুলেছেন অনেকে।

আরো সংবাদ