স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

মিয়ানমারে বিক্ষোভ: গুলিতে নিহত বেড়ে ১৮, বিশ্বব্যাপী নিন্দা

মিয়ানমারে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিন দিন আরও রক্তক্ষয়ী আর ভয়াবহ হয়ে উঠছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ১৮ বিক্ষোভকারী মারা গেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, বিশ্বনেতারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

আল জাজিরা জানায়, জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস রোববার সামরিক বাহিনীর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়াও এ ঘটনায় বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলেরও সমালোচনার মুখে পড়েছে মিয়ানমার জান্তা।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “পুলিশ ও সামরিক বাহিনীগুলো শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়ে প্রাণঘাতী শক্তি ও কম প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করেছে তাতে- জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের পাওয়া বিশ্বাসযোগ্য তথ্য অনুযায়ী- অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।”

গণমাধ্যমের বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, ইয়াঙ্গুনে কয়েকজন লোককে ধরাধরি করে প্রতিবাদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তাদের কয়েকজনের দেহ রক্তাক্ত। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তারা কীভাবে আঘাত পেয়েছেন তা স্পষ্ট না হলেও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে গুলির কথা বলা হয়েছে। ‘মিয়ানমার নাও’ জানিয়েছে, লোকজনকে ‘গুলি করা’ হচ্ছে; কিন্তু বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি তারা।

ইয়াঙ্গনের বিভিন্ন অংশে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ গুলি ছোড়ে।

বুকে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে বলে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন। মিজিমার টেলিভিশন চ্যানেলও এই মৃত্যুর কথা জানিয়েছে।

এদিকে আল জাজিরা জানায়, অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রায় ১০০০ বিক্ষোভকারীকে রোববার আটক করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সামরিক বাহিনীকে একটি পরিষ্কার সংকেত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।”

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক প্রধান জোসেপ বরেল এক বিবৃতিতে বলেছেন যে “শীঘ্রই এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেব আমরা”। বরেল যোগ করে বলেন, “সামরিক কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং জনগণকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের স্বাধীনতা প্রকাশের অনুমতি দিতে হবে।”

মিয়ানমার জান্তার বিরুদ্ধে আরও নিন্দা জানিয়েছে, ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিশ্বের আরও অনেক দেশ।

আরো সংবাদ