স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

সোনা চোরাচালান: বাহক পান বিমানের টিকিট ও ৩০ হাজার টাকা !

প্রায় ৫ মাস আগে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে কোটি টাকা মূল্যের ১৬০টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হেলাল উদ্দিন নামে এক যুবককে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নগরের ষোলশহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন হেলাল। হেলালের বাড়ি ফটিকছড়ির জাফতনগর গ্রামে। তার বাবার নাম সামশুল আলম।

এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহ নেওয়াজ খালেদ।

এর আগে গত বছর ১৫ অক্টোবর সকালে দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের তিনটি সিটের নিচ থেকে সাড়ে ১০ কোটি টাকা মূল্যের ১৮ কেজি ওজনের ১৬০টি স্বর্ণের বার জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে সময় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এ ঘটনায় নগরের পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের হয়।

সেদিন দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে তল্লাশি চালান কাস্টমস কর্মকর্তারা। তখন বিমানের পেছনের দিকের তিনটি সিটের নিচ থেকে পাওয়া যায় কালো টেপ মোড়ানো ৮টি প্যাকেট। আর সেগুলো খুলে পাওয়া যায় ১৬০টি স্বর্ণের বার। সিটের নিচে স্বর্ণের বার পাওয়া গেলেও আটক করা যায়নি কাউকে।

এ ঘটনার পর দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস তদন্ত করে হেলালের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় সিআইডি। সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে হেলালকে আমরা গ্রেপ্তার করি। এরপর হেলাল স্বীকার করেন, ১৬০টি স্বর্ণের বারের মধ্যে তিনি ৪০টি দুবাই থেকে চট্টগ্রামে এনে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের চেকপোস্ট পার করার দায়িত্বে ছিলেন। বাকি ১২টির দায়িত্বে ছিল অন্যরা। হেলাল কয়েকজনের নাম বলেছেন, তবে তদন্তের স্বার্থে আমরা সেগুলো এখনই প্রকাশ করতে পারছি না।’

হেলাল সিআইডিকে জানিয়েছেন, সোনা চোরাচালান চক্রের সবাই বাংলাদেশি। চক্রে ৭-৮ জন আছেন। তাদের অধীনে বাহক আছেন বেশ কয়েকজন। দুবাই ইমিগ্রেশন এবং দেশটির কাস্টমস চেকপোস্ট পার করে দেওয়ার দায়িত্ব থাকে চোরাচালান চক্রের আর দেশে আনার পর ইমিগ্রেশন-কাস্টমসের নজর এড়িয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তির হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত দায়িত্ব বাহকের।

‘১৬০টি স্বর্ণের বারের যে চালান আটক হয়েছিল, সেটিও ছিল হেলালের স্বীকারোক্তিতে পাওয়া চক্রটিরই। চক্রের প্রধান ব্যক্তি হেলালকে ৪০টি স্বর্ণের বার দেন। তাকে টিকেটের দাম ও চালান চট্টগ্রামে আনা বাবদ ৩০ হাজার টাকা দেন। এভাবে প্রতিটি চালান চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে পৌঁছে বলে জানিয়েছেন হেলাল। ১৬০টির চালান ধরা পড়ার পর হেলাল আরও ৪-৫ বার দুবাইয়ে গেছেন এবং ফিরে এসেছেন। প্রতিবারই কাস্টমসের শুল্ক পরিশোধ করে দুইটি বার ও গহনা এনেছেন। তবে ১৬০টির চালান ধরা পড়ার আগে ৩০টির একটি চালান হেলাল এনেছিলেন।’

আরো সংবাদ