স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

বাংলাদেশে এ বছর ৩.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে : বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

এর আগে গত জানুয়ারি মাসে গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। কিন্তু অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গতি–প্রকৃতি বিবেচনা করে তিন মাস পরে এসে তা বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

সংস্থাটির পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। আর পরের বছর তা বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।

আজ (বুধবার) প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস স্প্রিং ২০২১: সাউথ এশিয়া ভ্যাকসিনেটস’ প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির এরকম পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। করোনাকালীন অনিশ্চয়তার মধ্যে বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৬ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে থাকবে। এ প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে বর্তমান করোনার টিকা প্রদান কর্মসূচির গতি–প্রকৃতি, চলাচলে নতুন নিষেধাজ্ঞা, কত দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হয়, তার ওপর। পুনরুদ্ধার পর্যায়ে রপ্তানি ও স্থানীয় ভোগ অব্যাহত থাকলে মধ্য মেয়াদে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ থেকে ৭ শতাংশ হবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে। তবে এখনো অর্থনীতিতে ব্যাপক অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে সংস্থাটি মনে করে। করোনা মহামারি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা যেমন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে, আবার পরিবর্তিত করোনা পরিস্থিতিতে সরকারকে কী ধরনের নীতি গ্রহণ করতে হয়, তাও আরেক ধরনের অনিশ্চয়তা। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার কারণে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটন কার্যালয় থেকে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, করোনার কারণে বহু লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। এমন অবস্থায় নিরাপদ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথ হলো টিকা প্রদান। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশকে টিকা কেনার অর্থ দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার সব মানুষের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে চায়।

বিশ্বব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রদান করতে হলে ৪৪ থেকে ১৮৮ কোটি ডলার লাগবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ হ্যানস টিমার বলেন, বাংলাদেশের বিপদ এখনো কাটেনি। এখনো অনেক অনিশ্চয়তা আছে। গত দুই প্রান্তিকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে নানা ধরনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে সমস্যা অতিক্রম হয়েছে। কেননা, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় কত লোক কোভিড-১৯–এ সংক্রমিত হচ্ছেন, তা নির্ধারণ করা কঠিন। সরকারি তথ্য–উপাত্তে যে সংখ্যা দেখানো হয়, তা সংক্রমিত ব্যক্তির প্রকৃত সংখ্যা নয়।

আরো সংবাদ