স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

করোনায় দেশটাকে আগলে রেখেছেন রেমিটেন্স যোদ্ধারা

তারকা ক্রিকেটার মাশরাফি প্রায়ই বলেন, আমরা শুধু আইকন না এদেশে নানা সেক্টরে আইকনিক মানুষ আছে- সত্যিই তাই। বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে রেমিট্যান্স প্রবাহ আর গার্মেন্টস শিল্পের ওপর। কিন্তু আমরা গার্মেন্টস শিল্পের বিষয়ে গুরুত্ব দিলেও প্রবাসযোদ্ধাদের কথা চিন্তা করি না।

গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, করোনা মহামারির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিনে গত বছরের এপ্রিল মাসের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাস শেষে নতুন রেকর্ড হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, প্রবাসীরা এ মাসের প্রথম ১৫ দিনে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১১৫ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯ হাজার ৮০২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। গত বছরের এপ্রিলের পুরো মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। সেই হিসাবে ১৫ দিনেই পুরো মাসের চেয়ে ৬ কোটি ৩ লাখ ডলার বা ৫১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। প্রবাসী আয়ের এই গতি অব্যাহত থাকলে চলতি এপ্রিল মাস শেষে রেমিট্যান্স আহরণ ২৩০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

এই মহামারিকালে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি রেমিট‍্যান্স এসেছে। দেশের রিজার্ভ মুদ্রার পরিমাণ বেড়েছে। খেয়ে না খেয়ে পরিবারের জন্য প্রবাসযোদ্ধারা বেশি করে টাকা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। তাদের পরিবারকে আগলে রেখেছে। আমরা যে গ্রামীণ অর্থনীতির কথা বলি এর পেছনের গল্প প্রবাসীদের ঘাম ঝরানো আয়। দেড় কোটি প্রবাসীর হাত ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বেঁচে আছে পাঁচ কোটি মানুষ। বলা চলে, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অর্থনীতির ধারক-বাহক প্রবাসীরা।

অভিবাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী প্রত‍্যক্ষ-পরোক্ষভাবে প্রবাসীদের ওপর নির্ভরশীল। সব গল্পের বাইরে একটি গল্প চাপা পড়ে যায়, তা হলো প্রবাসীর কষ্ট। প্রবাসে বাংলাদেশিরা বহুভাবে হয়রানির শিকার হয়। আমরা প্রবাসীদের পদে পদে হেয় করি। এসব বিষয়ে প্রবাসী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকটাই নির্বিকার।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি রেমিট‍্যান্স আহরণকারী দেশ ভারত। ভারতকে অনুসরণ করে হাঁটছে নেপাল। কিন্তু সেই অনুপাতে আমাদের দেশের জনশক্তি প্রকল্পগুলো কতটুকু শক্তিশালী করেছি! ভাবনার সময় এসেছে। জোর গলায় বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মজবুত ভিতে দাঁড় করেছে এই প্রবাস শার্দূলরা।

বিদেশে যাওয়ার জন্য সহজ উপায়ে ঋণ দেওয়া, যারা করোনাকালে ফিরে এসেছে তাদের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। রাষ্ট্র এ যাবতকালে প্রবাসীদের জন্য বৃহৎ পরিসরে কিছুই করেনি। প্রবাসীদের কাছ থেকে দুহাত দিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি।

আরো সংবাদ