স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

দুবাই যাওয়া হলো না সুভাষের

রাজধানীর খিলক্ষেতের কুড়িল ফ্লাইওভারে দুবাই ফেরত সুভাষ চন্দ্র সূত্রধরের (৩২) গলায় গামছা পেঁচানো লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৬ মে) কুড়িল ফ্লাইওভারে ভোর সাড়ে ৫টায় গলায় গামছা পেঁচানো লাশ রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহতের ভায়রা শ্রী কৃষ্ণ বাবু বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সুভাষ দুবাইতে থাকত। গত বছরের নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখে ছুটিতে দেশে আসে। এরপর ২১ নভেম্বর বিয়ে করেন। তার ছুটি শেষে শনিবার (৮ মে) মধ্যরাতে তার দুবাই চলে যাওয়ার কথা।

তিনি বলেন, কিন্তু দুবাই যেতে হলে এখন করোনা টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট লাগে। গতকাল রাতে তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জ থেকে মাইক্রোতে করে করোনা টেস্টের জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পরে আমার শাশুড়ি তাকে ফোনে না পেয়ে আমাকে ফোন করেন।আমি রাত ৪টার সময় এয়ারপোর্ট ও খিলক্ষেত এলাকায় তাকে খুঁজতে যাই। পরে একটি নম্বর থেকে খিলক্ষেত থানার পুলিশ আমাকে ফোন করে কুড়িল ফ্লাইওভারে আসতে বলে। তখন ভোর ৫টা বাজে। তার কাছে পাসপোর্ট ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি।

শ্রী কৃষ্ণ আরও বলেন, যেহেতু নতুন বিয়ে হয়েছে তাকে ওভাবে আমি খেয়াল করে দেখিনি। পাসপোর্টের সঙ্গে তার বর্তমান ছবির কোন মিল না পেয়ে বাড়িতে যোগাযোগ করে কনফার্ম হই। তার গলায় গ্রামীণ চেকের একটি গামছা পেঁচানো রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। শনিবার রাতে তার দুবাই ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু এখন সে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল।

নিহতের বিয়াই রিপন কুমার বলেন, সুভাষের আরও তিন ভাই দুবাই থাকেন। তার পরিবার জানিয়েছে বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলা থেকে তিনি মাইক্রোতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। শনিবার মধ্যরাতে তার দুবাই চলে যাওয়ার কথা ছিল। টিকেট কনফার্ম করা ছিল তার। টিকিটের ৪০ হাজার টাকাসহ ৬০ হাজার টাকা ছিল। তাদের এই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

তার বাড়ী বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার বড় নারায়নপুর গ্রামে। নিহত সুভাষ মৃত সুবীর চন্দ্র সূত্রধরের ছেলে। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।

খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিনুর রহমান বলেন, আমরা ভোরে খবর পাই গলায় গামছা পেছানো রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ ফ্লাইওভারে পড়ে আছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি গলায় গামছা পেঁচানো রক্তাক্ত অবস্থায় উপুড় হয়ে পড়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা তার কাছ থেকে পাসপোর্ট পেয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তার পাসপোর্ট দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছি তিনি দুবাই থাকতেন। গত বছরের ১৩ নভেম্বর তিনি দেশে আসেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, গামছা পার্টি তাকে হত্যা করেছে। আমরা তদন্ত করছি। পরিবারের লোক থানায় মামলা করার জন্য গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

আরো সংবাদ