স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

১১ দিনের ধ্বংসযজ্ঞের পর ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি

টানা ১১ দিন যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।

শুক্রবার (২১ মে) ভোর থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এর মাধ্যমে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর টানা ১১ দিনের বর্বর বোমা হামলার অবসান হলো।

যুদ্ধে ২৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই ফিলিস্তিনি নারী-শিশুসহ বেসামরিক মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরপরই গাজার রাস্তায় নেমে আসেন ফিলিস্তিনিরা। এসময় তারা ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’ এবং ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ’ স্লোগান দেন।

এছাড়া হামাস ও ইসরায়েল উভয়পক্ষই ১১ দিনব্যাপী এই যুদ্ধে নিজেরা জয়লাভ করেছে বলে দাবি করেছে। অন্যদিকে উভয়পক্ষের অস্ত্রবিরতির প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতির ‘সত্যিকারের সুযোগ’ সৃষ্টি হয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে বৃহস্পতিবারও হামাসের শতাধিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। জবাবে ইসরায়েলে একের পর এক রকেট হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা।

গত বেশকিছুদিন ধরেই গাজা এলাকায় ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ চলছিল জেরুজালেমে। গত ৯ মে লাইলাতুল কদরের রাতে আল আকসায় নামাজ আদায় শেষে উপস্থিত ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা বিক্ষোভ শুরু করলে তা দমন করতে তৎপর হয় ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী।

ওই দিনের সংঘাতে অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছিলেন। সংঘর্ষের পর থেকে আল আকসা মসজিদ ও এর সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রেখেছিল ইসরায়েলি পুলিশ। এর জেরে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন সরকারকে হুঁশিয়ারি দেয় হামাস। দলটি জানায়, ১০ মে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ চত্বর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার না করা হলে তার পরিণতির জন্য ইসরায়েল সরকার দায়ী থাকবে।

কিন্তু ইসরায়েলের সরকার এই হুমকিকে আমলে না নেওয়ায় ১০ মে সন্ধ্যার পর গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। হামাস এই হামলা শুরু করার কিছুক্ষণ পরই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ১১ দিনের এই ইসরায়েলি হামলায় গাজা ভূখণ্ডে ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শতাধিক নারী ও শিশু রয়েছেন।

ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলায় হামাসের কমপক্ষে ১৫০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। হামাস অবশ্য নিজেদের যোদ্ধাদের হতাহতের কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।

ইসরায়েলের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ জানিয়েছে, হামাসের রকেট হামলায় ১২ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুইজন শিশুও রয়েছে। এছাড়া ১১ দিনের এই যুদ্ধে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দিকে প্রায় চার হাজার রকেট ছুঁড়েছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব।

আরো সংবাদ