স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

কানাডায় দুই ডোজ টিকা নিলেই মাস্কমুক্ত আলিঙ্গন করা যাবে

কানাডায় দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারীরা মাস্কমুক্ত আলিঙ্গন করতে পারবেন। দেশটিতে এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। এই মৌসুমে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ থাকায় কানাডিয়ানরা বের হন ভ্রমণে। যোগ দেন বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানে। কিন্তু গত দুই ‌বছরে করোনাভাইরাস জীবনযাত্রার চিত্র পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। সামাজিক দূরত্ব আর সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানতে গিয়ে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে কানাডিয়ানদের জীবনযাত্রা।

কানাডায় গত ডিসেম্বরে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নাগরিকদের টিকা দেওয়া সম্পন্ন করার ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার। সেই ঘোষণা অনুযায়ী অনেক কানাডিয়ান নাগরিক ইতোমধ্যে দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন।

যেসব কানাডিয়ান করোনা প্রতিরোধে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, তারা একে অপরকে আলিঙ্গন করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, তারা বারবিকিউ পার্টিতে যোগ দিতে পারবেন এবং মাস্ক না পরে ও দূরে না থেকে রাতের খাবারের জন্য বন্ধুদের একটি ছোট দলে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে তাদের এখনও জনবহুল কনসার্ট, ক্রীড়া ইভেন্ট বা ঘরোয়া পার্টিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়ম রক্ষা করে চলতে হবে। কানাডার জনস্বাস্থ্য সংস্থা টিকাদানের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকরা কী কী করতে পারবেন সে সম্পর্কে শুক্রবার (২৫ জুন) একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে।

কানাডার স্থানীয় গণমাধ্যমে এই সংবাদটি প্রকাশ হলে কানাডিয়ানদের মাঝে আনন্দ বয়ে যায়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বস্তি প্রকাশ করেন।

কানাডার ক্যালগেরির এ বি এম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ বাতেন বলেন, সত্যিই অনেক ভালো লাগছে খবরটি শুনে। গত দুই বছর কানাডিয়ানদের জীবনযাপনে একঘেয়েমি এসে পড়েছিল। ঘরবন্দি মানুষরা অনেক হতাশায় দিন যাপন করেছেন। শুধু কানাডা নয়, সারা বিশ্বের মানুষ যেন করোনা থেকে মুক্তি পায়, মানুষের মাঝে শান্তি ফিরে আসে এমনটাই আমার প্রত্যাশা।

বিশিষ্ট কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, দীর্ঘ সামাজিক বিচ্ছিন্নতার পর এমন সংবাদ নিঃসন্দেহে আনন্দের। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিজ্ঞানের আবিষ্কারে আস্থা রেখে দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় এসে প্রতিটি সমাজ ও রাষ্ট্র এভাবেই আনন্দময় হয়ে উঠুক, এটিই আজকের প্রত্যাশা।

এর আগে একটি সংবাদ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ঘোষণা করেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য যোগ্য ২৬ শতাংশ কানাডিয়ান তাদের দুটি ডোজ পেয়েছেন এবং তা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সর্বোত্তম সুরক্ষা দিয়েছে। কানাডায় ভ্যাকসিন দেওয়ার যোগ্যদের মধ্যে ৭৬ শতাংশেরও বেশি মানুষ একটি ডোজ পেয়েছেন বলে তিনি জানান।

কানাডার প্রধান জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. থেরেসা ট্যাম বলেছেন, কানাডিয়ান নাগরিক যারা দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তারা এখনই কম ঝুঁকির সঙ্গে অনেক কিছু করতে পারবেন। তবে ভিড়ের মধ্যে যাওয়ার আগে তাদেরও দুবার চিন্তা করা দরকার।

ইতোমধ্যে কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে ৪৩ মিলিয়ন ভ্যাকসিন ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে, যা ইনোকুলেশন সুরক্ষার প্রচার চালাচ্ছে। ফেডারাল সরকার জুনের শেষের দিকে ৫০ মিলিয়ন এবং জুলাইয়ের শেষে ৬৮ মিলিয়ন ভ্যাকসিন ডোজ ডেলিভারি দেবে বলে আশা করছে। দেশে ভ্যাকসিনের প্রবাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রদেশগুলো আরও বেশি লোককে সামাজিকীকরণের জন্য স্বাস্থ্য বিধিনিষেধগুলো শিথিল করতে শুরু করেছে।

আরো সংবাদ