স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

ব্রিটেন প্রবাসীদের এনআইডির জন্য নিবন্ধনের আহ্বান

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ডের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে নাম নিবন্ধন করতে ব্রিটেন প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। তিনি বলেন, প্রবাসীরা যাতে এখানে বসেই তাদের এনআইডি কার্ড পেতে পারে সে লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দফায় দফায় কথা চলছে। কমিশন যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের তাদের নাম রেজিস্ট্রি করতে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৬শ প্রবাসী তাদের নাম রেজিস্ট্রি করেছেন। যারা নাম রেজিস্ট্রি করবেন তারাই আগে কার্ড পাবেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে আসবেন এবং লন্ডন, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারে অস্থায়ী অফিস স্থাপন করে কার্ডগুলো দেবেন।

হাইকমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ‘অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ফর এনআরবি’ নামে একটি পোর্টাল আছে। প্রবাসীদের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনারা যত বেশি পারবেন পোর্টালে গিয়ে নাম নিবন্ধন করবেন। এতে কিছু ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে। ডকুমেন্ট একবারে আপলোড করা সম্ভব না হলে সেগুলো সংগ্রহ করে আপলোড করবেন। সবগুলো ডকুমেন্ট আপলোড হয়ে গেলে তারা আপনাকে ভোটার হিসেবে রেজিস্ট্রি করে নেবে। আর রেজিস্ট্রি হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা যখন যুক্তরাজ্যে আসবেন তখন আপনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এনআইডি কার্ড পেয়ে যাবেন। এ ব্যাপারে হাইকমিশনের কনস্যুলার সেকশনে যোগাযোগ করলেও বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে।

সাইদা মোনা তাসনিম মঙ্গলবার (১৭ মে) বাংলাদেশ হাইকমিশনের কনফারেন্স রুমে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নির্বাহী কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ আহ্বান জানান। হাইকমিশনার প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত নেতাদের সম্মানে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। এসময় তিনি প্রবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। হাইকমিশনার বলেন, ব্রিকলেনের ওয়েলফেয়ার সেন্টারটিতে একসময় কনস্যুলার সেবা দেওয়া হতো। কিন্তু অজানা কারণে প্রায় ১০ বছর এ সার্ভিস বন্ধ ছিল। গত বছরের শেষ দিক থেকে আমরা আবারও সার্ভিস শুরু করেছি। গত নভেম্বর ও জানুয়ারিতে দুটি কনস্যুলার ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে আরো একটি সার্জারি অনুষ্ঠিত হবে। এই সার্ভিস আমরা অব্যাহত রাখব। তিনি বলেন, কনস্যুলার সার্ভিস শুরু করার পর ব্যাপক সাড়া মিলেছে। আমরা চাই কমিউনিটির মানুষের দোরগোড়ায় আমাদের সেবা পৌঁছে দিতে। হাইকমিশনের পাসপোর্ট সেকশনকে আরো সম্প্রসারণ করে কীভাবে প্রবাসীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায়— এমন প্রশ্নের জবাবে সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, তিনি হাইকমিশনার নিযুক্ত হয়ে লন্ডন আসার দুই দিনের মাথায় হাইকমিশন ভবনের প্রতিটি বিভাগ সরেজমিন ঘুরে দেখেন। গ্রাউন্ডফ্লোরের পাসপোর্ট সেকশনে গিয়ে দেখেন সেখানকার অবস্থা খুবই নাজুক। কনস্যুলার সেবা গ্রহণে প্রবাসী বাংলাদেশীদের যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি সেবাদাতা কর্মকর্তাদেরও অসুবিধা হচ্ছে। কারণ পাসপোর্ট সেকশনটি একেবারেই সংকীর্ণ এবং অপরিচ্ছন্ন। তাই তাৎক্ষণিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে বরাদ্দ এনে পাসপোর্ট সেকশনের আধুনিকায়নে কাজ করেন। এখন আগের চেয়ে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে মানুষ সার্ভিস নিতে পারছে। তবে জায়গাটি সংকীর্ণ। এটি আরো সম্প্রসারিত হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, আমরা হাইকমিশন ভবন লাগোয়া একটি নতুন প্রোপার্টি প্রায় তিন মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে কিনে নিতে সক্ষম হয়েছি। সেখান থেকে এখন পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হয়। তাছাড়া যারা পাসপোর্ট কিংবা নো-ভিসার প্রয়োজনে আসেন তাদের জন্য নতুন প্রোপার্টিতে আমরা ওয়েন্টি রুম রেখেছি। কাউকে এখন আর বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে মেঘ-বৃষ্টি খেতে হচ্ছে না। আমরা সাধ্যমতো প্রবাসীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন— লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, জেনারেল সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ, ট্রেজারার সালেহ আহমদ, অ্যাসিসটেন্ট ট্রেজারার মো. আব্দুল কাইয়ুম, মিডিয়া অ্যান্ড আইটি সেক্রেটারি মুহাম্মদ আব্দুল হান্নান, ইভেন্ট অ্যান্ড ফ্যাসিলিটিজ সেক্রেটারি রেজাউল করিম মৃধা, নির্বাহী সদস্য আহাদ চৌধুরী বাবু, সারওয়ার হোসাইন, শাহনাজ সুলতানা ও আলোকচিত্রী খালেদ হোসাইন।

হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরী, মিনিস্টার কনস্যুলার মো. মঈন খান, কাউন্সিলর মৌমিতা জিনাত ও প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।

আরো সংবাদ