স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

অবশেষে বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছে সৌদি আরব !

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছে সৌদি আরব। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করার ২৪ ঘন্টারও বেশি সময় পরে এই অভিনন্দন জানিয়েছে তারা। সারা বিশ্ব থেকে যখন জো বাইডেনকে অভিনন্দনের ঢল নামে তখন সেই দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবের নাম ছিল অনুপস্থিত। অনেকেই সকৌতুহলে এই দেশটির নাম খুঁজছিলেন। এর কারণও ছিল। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে ডনাল্ড ট্রাম্পের।

বিশেষ করে ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যায় বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উত্থাপন করা হয় যে, এই হত্যায় জড়িত ক্রাউন প্রিন্স। কিন্তু ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয় যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কারণে তিনি সে অভিযোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রেখেছেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও জামাল খাসোগি হত্যাকান্ডে কোনো কথা বলেননি। ওদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তার সম্পর্ককে নতুনভাবে পরিমাপ করবে বলে নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ৪৬তম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার আরো বেশি জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানাবেন।

একই সঙ্গে তিনি ইয়েমেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেয়া বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। ফলে জো বাইডেন নির্বাচিত হলেও সৌদি আরব থেকে তাকে অভিনন্দন জানাতে বিলম্ব করা হয়। প্রায় পুরো বিশ্ব থেকে অভিনন্দন জানানোর পর, তিনি নির্বাচিত হওয়ার ২৪ ঘন্টারও পরে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে সৌদি আরব। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয়, অন্য আরব রাষ্ট্রগুলো যখন ডেমোক্রেট চ্যালেঞ্জার বাইডেনের বিজয়ে অভিনন্দনের তাকে ভাসিয়ে দিয়েছে, তখন সৌদি আরবে ক্ষমতার মূলে থাকা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ছিলেন নীরব। তবে তিনি এ সময়ে তাঞ্জানিয়ায় পুনঃনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে কিন্তু উষ্ণ অভিনন্দন জানাতে ভুল করেননি।

রোববার গ্রিনিচ মান সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩২ মিনিটে সৌদি আরবের বাদশা সালমান ও তার ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সৌদি আরবের সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএ বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে এবং জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রমী, ঐতিহাসিক ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন বাদশা সালমান। এসব সম্পর্ক সব ক্ষেত্রে আরো শক্তিশালী ও উন্নত হোক প্রত্যেকেই তা প্রত্যাশা করে।

উল্লেখ্য, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটের ভিতর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে। এ ছাড়া ইয়েমেনে ভয়াবহ যুদ্ধে রিয়াদের ভূমিকা রয়েছে। নারী অধিকারকর্মীদের আটকে রাখা হয়েছে। এসব কারণে সৌদি আরবে মানবাধিকার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে একরকম সুরক্ষা পেয়ে যান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। কিন্তু এখন জো বাইডেন ক্ষমতায় আসছেন। ফলে তিনি এই ইস্যুগুলোকে সামনে আনবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থায় সৌদি আরবে টুইটার ব্যবহারকারী ড. মুনা লিখেছেন, কোভিড-১৯ এর চেয়ে খারাপ হবে বাইডেন-২০।

আরো সংবাদ