স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

সংঘাত নয়, ভালোবাসা দিয়ে মানুষের অন্তর জয় করার আহ্বান সুজনের

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘাতে না জড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস.রহমান হলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আগামী ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরবাসীর মহা উৎসবের দিন। এই দিন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাঁকে নৌকার প্রতীক দিয়েছেন চট্টগ্রামের বৃহত্তর স্বার্থে তাঁকে অবশ্যই জয়যুক্ত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে। এতে তাঁরা সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবে। তবে বিএনপি’র সচেতন অংশ ও চট্টল দরদীরা চট্টগ্রামের স্বার্থেই তাঁরা শেখ হাসিনার প্রার্থীকে ভোট দেবেন। কেননা শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলছেন।

খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি স্বস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজের বাসভবনে আইসোলেশনে ছিলাম। সকলের দোয়া ও ভালোবাসায় বৃহস্পতিবার নেগেটিভ রির্পোট পেয়ে করোনা মুক্ত হয়েছি। যাঁরা আমাকে দোয়া করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি সুস্থ হয়ে সাংবাদিকদের কাছে ছুটে এসেছি বিবেকের তাড়নায়, কিছু না বলা কথা আকাংখা সাংবাদিকদের কাছে খুলে বলার তাগিদ থেকে।

তিনি উল্লেখ করেন, ইতোপূর্বে ৩১ মার্চ চসিক নির্বাচন করোনা প্রার্দুভাবে স্থগিত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আমাকে প্রশাসক পদে নিযুক্তি দিয়ে ধন্য করেছেন। আমি আমার যোগ্যতা, সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতা দিয়ে নগরবাসীর ভালোবাসা ও আস্থায় নিষ্ঠার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে চেষ্টা করেছি। আমার মেয়াদকালীন সময় ৬ মাসের মধ্যে দেড় মাস সাপ্তাহিক ও সরকারি সাধারণ ছুটি থাকলেও আমি প্রায় প্রতিদিন মানুষের কাছে গেছি, সমস্যার কথা শুনেছি এবং সমাধানের চেষ্টা করেছি।

তিনি আরো বলেন, প্রশাসক পদে থাকায় নির্বাচনী আচরণ বিধির বাধ্যবাধকতার কারণে চসিক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি প্রচরনায় অংশ নিতে পারছিনা। তবে অন্তর থেকে উপলব্দি করি মেয়র পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী বিজয়ী হলে চট্টগ্রামের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, প্রয়াত জননেতা এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হবার সময় চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও স্বপ্ন পূরণে ২৮ দফা অঙ্গীকার ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগুলো একে একে পূরণ করে চলেছেন। এগুলোর মধ্যে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণ, মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্র বন্দর, বে-টার্মিনাল নির্মাণ, ফেনী থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বাইপাস নির্মাণ, মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মান, চট্টগ্রাম-ঢাকা ডবল রেল লাইন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। এসব বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের গুরুত্ব হিমালয়সম উচ্চতায় সমুন্নত হবে। চট্টগ্রাম অবশ্যই বাণিজ্য ও পর্যটন বান্ধব নগরীতে পরিণত হবে। আমারা এখন সেই সুদিনের অপেক্ষায় আছি। আমি আজ বিবেকের তাড়ণায় সেই কাংখিত শুভ দিনের বার্তা দিয়ে গেলাম।

সুজন বলেন, এম.এ. আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের জন্য যে স্বপ্ন দেখতেন তা বাস্তবায়িত হবার পথে, এবার যিনি মেয়র হবেন তিনি দলের প্রার্থী হলেও নগর পিতা হিসেবে সকলের। সবার সম্মিলিত সহযোগে সমৃদ্ধ চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। যিনি নির্বাচিত হবেন তাঁকে মনে রাখতে হবে পাবলিক মানি ও পাবলিক প্রপার্টি কখনো যেন নিজের না হয়। তা হলেই জনমঙ্গল নিশ্চিত হবে। চট্টগ্রামের প্রতি ইঞ্চি মাটি খুবই দামী। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করেন, সংঘাত ও সংঘর্ষ চাই না। শক্তি দিয়ে নয়, ভালোবাসা দিয়ে মানুষের অন্তর জয় করা যায়।

তিনি আরো বলেন, আমার মেয়াদকাল ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শেষ দিনটি পর্যন্ত আমি অর্পিত দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর।

আরো সংবাদ