স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না কৃষক, হিমাগার নির্মাণের আবেদন সুজনের

দেশের প্রান্তিক কৃষকরা প্রায়শই অভিযোগ করেন তারা ফসলের ন্যায্য দাম পায়না। কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে প্রতি উপজেলায় শস্যগোলা এবং হিমাগার নির্মাণে কৃষি মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

আজ মঙ্গলবার (১৫ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এর নিকট সবিনয় এ আবেদন জানান।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে কৃষিজাত পণ্য, ফলমূল উৎপাদন এবং মৎস্য সম্পদ আহরণে বাংলাদেশ এক অপার বিস্ময়।

ঘনঘন ঝড় বৃষ্টি, বন্যা, মন্বন্তরের দেশ বাংলাদেশ খাদ্য এবং ফলমূল উৎপাদনে বিশ্বে এক রোল মডেল। বর্তমান সরকারের আমলে দেশের কৃষকরা সহজেই সার, বীজ, কীটনাশকসহ নানা কৃষি উপকরণ সহজমূল্যে হাতের নাগালে পাচ্ছে। বাজেটে কৃষিখাতকে বিশেষ গুরুত্বদান করা হয়েছে।

নানামূখী পদক্ষেপের কারণে দেশে নানাজাতের বীজের সরবরাহ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে সবজিসহ বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন অধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

আজ দেশের কোথাও সার, বীজ কিংবা কীটনাশকের জন্য কৃষককে গুলিতে জীবন দিতে হয়না। বন্যা, সিডর, আইলা, মহাসেনসহ নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ফসল উৎপাদনে প্রণোদনা প্রদান করে কৃষিখাতে উৎসাহ সৃষ্ঠি করছে সরকার।

তিনি বলেন, কৃষিবান্ধব বর্তমান সরকার একসময়কার খাদ্য ঘাটতির দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত করার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে নানামূখী পরিকল্পনার মাধ্যমে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে যে সরকারের বহুমূখী কার্যকরী উদ্যোগের মাঝেও প্রান্তিক কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পায়না।

ফলে কৃষি খাতে সরকারের বিশাল ভর্তূকির পরেও এর সুফল ভোগ করতে পারছে না একজন প্রান্তিক কৃষক। মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ন্যের কারণে প্রায়শই ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ কৃষক।

ফসলের লাভের বিশাল একটি অংশ সবসময়ই চলে যায় মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের পকেটে। শুধুমাত্র কৃষি, খাদ্য এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে একটি সুন্দর এবং সুষ্টু বাজার ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের প্রকৃত মূল্য সুনিশ্চিত করা যায়।

তবে এক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া প্রান্তিক কৃষককে ফসল উৎপাদনের পূর্বেই সহজ শর্তে ঋণ দানের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে কৃষকরা দাদনের লোলুপ দৃষ্টি থেকে সহজেই মুক্তি পায়।

তাই প্রান্তিক কৃষক যাতে ফসলের ন্যায্য দাম পান সে লক্ষ্যে প্রতি উপজেলা এবং অধিক হারে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনকৃত এলাকায় কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে একটি করে শস্যগোলা এবং হিমাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য কৃষিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সুজন।

তিনি বলেন এর ফলে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের একটি নির্দিষ্ট বাজার দাম নির্ধারণ করবে সরকার। সে দামে পণ্য বিক্রয় করা না গেলে সরকার সরাসরি কৃষকের উৎপাদিত সেসব পণ্য ক্রয় করে শস্যগোলায় সংরক্ষণ করবে।

পঁচনশীল পণ্য হলে তা হিমাগারে সংরক্ষণ করবে। এর ফলে কৃষককে তার উৎপাদিত পণ্য নিয়ে আর হা-হুতাশ করতে হবে না। মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ন্য অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ হবে। প্রান্তিক কৃষকরাও ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত হবে।

আর ভোক্তাসাধারণও সারাবছর একটি নির্দিষ্ট দামে পণ্য ক্রয় করতে পারবে। ফলে পণ্যের দাম পরিশোধ করতে ভোক্তাদের অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করতে হবে না। এতে করে হঠাৎ করেই দাম বৃদ্ধির প্রবণতা কমে আসবে।

তাই উক্ত বিষয় নিয়ে এখনই মন্ত্রণালয়সহ সরকারের নীতিনির্ধারক মহলকে গুরুত্বের সাথে বিষয়টি অনুধাবন করার অনুরোধ জানান তিনি।

সুজন আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিটি উপজেলায় যদি সরকার শস্যগোলা এবং হিমাগার নির্মাণের প্রকল্পটি সত্যিকার অর্থে কার্যকর করতে পারেন তাহলে পণ্য উৎপাদন এবং বিপণন নিয়ে বিশ্বে রোল মডেল হয়ে থাকবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।

তিনি শস্যগোলা এবং হিমাগার নির্মাণের প্রকল্পটি কার্যকর করার লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উর্দ্ধতন মহলের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানান।

আরো সংবাদ