স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০ দুবাইতে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন

বিশ্বের বৃহত্তম প্রদর্শনী ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০ দুবাইয়ে বাংলাদেশ প্যাভেলিয়নের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১ অক্টোবর) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্যাভেলিয়নের উদ্বোধন করেন। প্রথমবারের মত বাংলাদেশ নিজস্ব প্যাভেলিয়নে ওয়ার্ল্ড এক্সপােেত অংশগ্রহণ করলো। ছয় মাসব্যাপী চলবে এই প্রদর্শনী। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি এবং ইতিহাস ও এতিহ্যকে প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হবে। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে প্যাভেলিয়নের কনফারেন্স রুমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অপ্রতিরাধ্যে বাংলাদেশ : বাণিজ্য ও বিনিয়ােেগর জন্য একটি আশাব্যঞ্জক গন্তব্য’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি,বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। অনুষ্ঠানের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন, এনআরবি সিআইপি এসািেসয়েশনের সভাপতি ও আল হারামাইন গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহাতাবুর রহমান নাসির, মার্কিন প্রবাসী ব্যবসায়ী ও কেপিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান কালীপ্রদীপ চৌধুরী প্রমূখ। সেমিনারে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিলারা আফরাজে খান মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন।টিপু মুনশি তার বক্তব্যে প্রবাসীদেরকে মাতৃভ‚মি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগে উপযোগি পরিবেশ বিরাজ করছে। আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ঈর্ষনীয়। পাশ্ববর্তী দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে গেছি। আপনারা বিনিয়োগ নিয়ে আসুন, সরকার আপনাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের বিনিয়াগে আরও সহজ করার জন্য কোন প্রস্তাব যদি আপনাদের থাকে, সেটি নিয়ে আসুন। সরকার সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখবে।বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। গত ৫০ বছরে কতটা এগিয়েছে সেসব সাফল্য দুবাই এক্সপোর মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানানো হবে। অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানারে পাশাপাশি কর্মসৃজন কার্যক্রমে বিনিয়োগের আহবান জানান। তিনি বলেন, রেমিটেন্স পাঠিয়ে বাড়ি বানানো কিন্তু বিনিয়োগ নয়। এমনখাতে আপনারা বিনিয়োগ করুন, যেখানে কর্মসংস্থান তৈরি হয়। দেশের রপ্তানি বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের যে প্রবৃদ্ধি-তাতে বুঝা যায়, সেখানে বিনিয়াগে পরিবেশ কেমন। বিনিয়োগের দারুণ সুযোগে-সুবিধা রয়েছে। সরকার নীতি-সহায়তা দিচ্ছে। আপনার তার ব্যবহার করুন। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, এবারের এক্সপোতে কেবল রপ্তানি বা বাণিজ্যের কথা বলা হবে না,দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বাংলাদেশীরা যে একটি মানবিক জাতি সেসব বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হবে এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে। আগামী ছয়মাসে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে শক্তিশালীভাবে তুলে ধরা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বৃহ¯পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় আরব-আমিরাত সরকার ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০ দুবাই এর উদ্বোধন করে। ১৯২টি দেশ এবারের এক্সপোতে অংশগ্রহণ করেছে। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্য,আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে প্রথমবারের মত এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালে ইটালির মিলানে ওয়ার্ল্ড এক্সপো অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশের দ্বিতল প্যাভিলিয়নের ৪৩৬ বর্গমিটার জায়গায় ডিজিটাল প্রদর্শনী ছাড়াও রয়েছে অফিস, কনফারেন্স রুম, বি টু বি মিটিং হল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নকে সাজানো হয়েছে। পণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি দেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে সেখানে চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

আরো সংবাদ