স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

চীনকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ওয়েনের হুঁশিয়ারি

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই-ইং-ওয়েন বলেন তাইওয়ান চীনের কাছে পতন হলে এশিয়ায় শান্তির পরিবেশের জন্য তা বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনবে। মঙ্গলবার ‘ফরেইন অ্যাফেয়ার্স’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক নিবন্ধে সাই এই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাইওয়ান হুমকিগ্রস্ত হলে নিজেদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই নেবে। তাইওয়ানকে নিজেদের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি প্রদেশ বলে মনে করে চীন। অন্যদিকে, তাইওয়ান দাবি করে তারা স্বাধীন, সার্বভৌম। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণে রাখা ‘অনিবার্য’ বলে মনে করেন এবং এ লক্ষ্যে তিনি দ্বীপটিকে নানা দিক থেকেই চাপে রাখছেন। গত শুক্রবার থেকে বেইজিংয়ের প্রবল চাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাইওয়ানকে। ওই দিন থেকে শুরু করে গত চারদিনে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানায় ১৪৮টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক এবং অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেছে চীন। অনদিকে, সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য চীনকেই ‘নাটের গুরু’ আখ্যা দিয়েছে তাইওয়ান। ফরেইন অ্যাফেয়ার্স-এর নিবন্ধে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই লিখেছেন, যেহেতু বিভিন্ন দেশ চীনের কমিউনিস্ট পাটির্র হুমকিকে স্বীকার করে, তাই তাদের উচিত তাইওয়ান দ্বীপের সঙ্গে কাজ করার মূল্য অনুধাবন করা। তাদের এও স্মরণে রাখা উচিত যে, যদি তাইওয়ানের পতন ঘটে, তাহলে আঞ্চলিক শান্তি ও গণতান্ত্রিক জোট ব্যবস্থার পরিণতি হবে বিপর্যয়কর। এটা তখন সেই সংকেতই দেবে যে, বিশ্বব্যাপী আজকের মূল্যবোধের প্রতিযোগিতায় গণতন্ত্রের ওপরে রয়েছে কর্তৃত্ববাদের প্রভাব।সাই-ইং-ওয়েন তাইওয়ানকে ‘এক চীন নীতি’র আওতাধীন মানতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে চীন তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে মনে করে। তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের আলোচনাও বন্ধ রয়েছে। সাই তাইওয়ানকে ‘স্বাধীন দেশ’ বলে আসছেন এবং ‘রিপাবলিক অব চায়না’ কেবল তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক নাম বলে দাবি করে আসছেন। নিবন্ধে তিনি লেখেন, তাইওয়ান কোনও সামরিক সংঘাত চায় না বরং চীনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সহাবস্থান চায়। কিন্তু তাইওয়ানের গণতন্ত্র এবং জীবনযাত্রা হুমকির মুখে পড়লে তারা আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে। তাইওয়ানের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়লে জনগণ জেগে উঠবে।চীনের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই। তবে তা সমতার ভিত্তিতে এবং রাজনৈতিক কোনও শর্ত ছাড়া হওয়ার দাবি করেছেন তিনি। বেইজিং বরাবরই এমন শর্তাধীন আলোচনা নাকচ করে আসছে। চীনা যুদ্ধবিমানের বারবারই তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিষয়টি উল্লেখ করে সাই লিখেছেন, “পিপলস লিবারেশন আর্মির প্রায় প্রতিদিনের অনুপ্রবেশের মধ্যেও চীন-তাইওয়ান সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থানের নড়চড় হবে না: তাইওয়ান চাপের কাছে মাথা নত করবে না।

আরো সংবাদ