স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

হাটহাজারী এখনো থমথমে, মাদ্রাসাছাত্ররা রাস্তায়, গাড়ি চলাচল বন্ধ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গতকাল শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে মাদ্রাসাছাত্রদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার পর আজ শনিবার সকালেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বন্ধ রয়েছে ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়কে যানবাহন চলাচল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র‍্যার ও পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। হাটহাজারী থানার সামনে বিজিবির সাঁজোয়া যান রাখা হয়েছে।

হাটহাজারী থানা থেকে উত্তরে ত্রিবেণী মিষ্টির দোকান মোড়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে সেখানে বিপুল সংখ্যক মাদ্রাসাছাত্র অবস্থান করছে। এ কারণে হাটহাজারী থেকে উত্তর চট্টগ্রামের দিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের মধ্যস্ততায় হেফাজত নেতা এবং পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মধ্যে বৈঠক হলেও বিরাজমান সমস্যার সমাধান হয়নি।

আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে হাটহাজারী থানায় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন ও জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় অবস্থান করছেন।

ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল রাতে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তারা ৫টি দাবি দিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে নিহত চারজনের ময়নাতদন্ত সঠিকভাবে করতে হবে। তাদের দাফন কাফনে যেন কোন অসুবিধা না হয়, এ ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তাদের সু চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং গুলি করার ঘটনায় দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আজ শনিবার সকাল ৯ টার দিকে সরেজমিন দেখা গেছে, হাটহাজারী বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। থানা ভবনের দক্ষিণে বাস স্টান্ডে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে সেখানে অবস্থান করছে বিপুল সংখ্যক র‍্যাব ও পুলিশ। থানা এবং আশপাশে অবস্থান নিয়েছে বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশ।

হাটহাজারী মাদ্রাসার দক্ষিণে ত্রিবেণী মিষ্টির দোকান এলাকায় চট্টগ্রাম-নাজিরহাট সড়কে বাঁশ ও টিনের ব্যারিকেড দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা অবস্থান করছে। কিছুক্ষণ পরপর মাদ্রাসার ছাত্ররা ‘গো ব্যাক মোদি, গো ব্যাক মোদি’ বলে স্লোগান দিচ্ছে।

এর আগে ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের নেতাকর্মী ও মুসল্লিদের একাংশ এবং ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে হাটহাজারীর মাদ্রাসার ছাত্ররা শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল বের করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। বেলা আড়াইটা থেকে বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম-হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়কে যান চলাচল।

ঘটনার সময় ছাত্ররা হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস, ডাকবাংলোতে হামলা করে। ভূমি অফিসের ফাইলপত্র ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে। এরপর পুলিশ গুলি ছোড়ে। এভাবে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। এরপর ছাত্ররা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

ঘটনার সময় সহকারী পুলিশ সুপারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মাদ্রাসার ছাত্ররা আটক করে। এদিন বিকাল ৫টার দিকে জিম্মি থাকা সহকারী পুলিশ সুপার ফারাবিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের ছাড়িয়ে আনেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আরো সংবাদ