স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

মগবাজারে বিস্ফোরণ- কারণ সম্পর্কে যে তথ্য জানা যাচ্ছে

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত জনে। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি, এখানে যে শর্মা হাউজ ছিল। মূলত সেখান থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে সম্ভবত গ্যাস জমেছিল এই গ্যাস বিস্ফোরণের কারণে আশেপাশের সাতটি বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পথে থাকা দুটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা সাতজন মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি।’

এদিকে রাজধানী মগবাজারে গ্যাস জমে ভবনে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। রোববার (২৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে সাতজন মারা যান।

বিস্ফোরণের পর রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি এখানে কিছু গ্যাস জমে ছিল। এই গ্যাস বিস্ফোরণের কারণে আশপাশের সাতটা ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দুইটা বাস বিধ্বস্ত হয়েছে। ৫০ জনের ওপর আহত হয়েছে।

এদিকে, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সও ধারণা করছে মগবাজারে গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা পরীক্ষা করছি। গ্যাস জাতীয় কিছু থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ৭টা ৩৪ মিনিটে খবর পেয়ে আমাদের টিম এখানে আসে। তিনতলা ভবনের নিচতলায় ফাস্টফুডের দোকান, দ্বিতীয় তলায় সিঙ্গারের একটি গোডাউন ছিল। বিস্ফোরণের কারণে ব্লাস্ট ওয়েভ ও সাউন্ড ওয়েভ সৃষ্টি হয়। এতে আশপাশের ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ভবনের সব পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি বলতে পারি এই ভবন বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মুহূর্তের মধ্যেই সব ঘটে গেছে। বিকট শব্দ, অন্ধকার, ধোঁয়া আর ধুলোবালি আর অসংখ্য কাঁচের টুকরো ছিটে এসেছে।

ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধারকাজ চালায় পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বিভাগ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারাও সেখানে গিয়ে ধ্বংসস্তুপ থেকে আলামত সংগ্রহ করেন।

ঘটনার পর তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শর্মা হাউজে দুটি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছেন। তবে তারা সরাসরি গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন।

বিস্ফোরণে শিশুকন্য ও স্ত্রী হারানো সুজন নামের এক ব্যক্তি জানান, রোববার বিকালে স্ত্রী জান্নাত মোবাইলে তাকে জানিয়েছিলেন মেয়ে সুবাহানা ও ছোট ভাই রাব্বিকে নিয়ে মগবাজারে শর্মা হাউজে কর্মরত এক আত্মীয়ের সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন। আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, মারা যাওয়া নারী ও শিশুসহ অন্যরা শর্মা হাউজে কিংবা এর সামনে ছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন। একারণে শর্মা হাউজই বিস্ফোরণের কেন্দ্র বলে তারা ধারণা করছেন।

আরো সংবাদ