স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

কবে হবে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে র‍্যাপিড পিসিআর ল্যাব

অবশেষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চালু হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্লাইট। অথচ এখনও পর্যন্ত চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কোভিড পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কোন সিদ্ধান্তই আসেনি। যদিও ইতোমধ্যে আলোচ্য বিমান বন্দরটিতে ল্যাব স্থাপনের সম্ভাব্য স্থানও নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে ল্যাব স্থাপন নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই খেসারত দিতে হচ্ছে বিমানবন্দরটি দিয়ে যাতায়াত করা দেশে এসে আটকা পড়া প্রবাসীরা। এমতাবস্থায় দ্রুত চট্টগ্রামের এ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে র‍্যাপিড টেস্ট ল্যাব চালুর দাবি প্রবাসীদের।এদিকে, সিদ্ধান্ত না হলেও ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপন করতে তোড়জোড় শুরু করেছে চট্টগ্রামের কয়েকটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যাদের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্ট্রারের টেকনিক্যাল সার্ভেও করা হয়েছে। তবে সে প্রতিষ্ঠানটি  কোভিড পরীক্ষা করতে পারবে কি-না, এমন অনুমোদও এখনো মেলেনি। যদিও বিমান কর্তৃপক্ষ বলছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন পেলে অবকাঠামোগত কাজ শুরু করতে পারবে যে কোন মুহূর্তে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন খান বলেন, ‘শাহ আমানত বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট তথা আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। তবে ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে সিভিল এভিয়েশন সদর দপ্তরের এখনও মতামত পাওয়া যায়নি। মতামত পেলেই বাকি কাজ করা হবে’।কবে নাগাদ অনুমোদন বা ল্যাব স্থাপনের নির্দেশনা পেতে পারে এবং চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন প্রশ্নে বিমান বন্দরের এ পরিচালক বলেন, ‘কবে চালু হতে পারে, সেটা বলা মুশকিল। আসলে এখন একটা ঘোষণা দেয়া হলো, কিন্তু পরে তা মেনটেইন করা যায় না। সে হিসেবে নির্দিষ্ট করে বলাও যাবে না চালু কবে হবে। তবে এটা বলতে পারি, সিভিল এভিয়েশন আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন পাওয়া গেলে অবকাঠামোগত কাজ শুরু করা যাবে। আমাদের পক্ষ থেকে ল্যাব স্থাপনের মতো স্থান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারপরও এসওপি’র অনুমোদনের বিষয় রয়েছে’।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য ফ্লাইটে সর্বমোট সাত থেকে আটশ’ যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বন্ধ থাকলে তাতে অন্তত ৩শ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ যাত্রীর যাতায়াত থাকে এ বিমানবন্দর দিয়ে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দিনে এত যাত্রী যাতায়াত করলেও ছয় ঘণ্টার মধ্যে একটি ল্যাবে কোভিড পরীক্ষার ফল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে  পেতে ভোগান্তি বাড়তে পারে যাত্রীদের। ফলে অন্তত দুই থেকে তিনটি ল্যাব স্থাপন করা গেলে দ্রুত ও সহজযোগ্য হয়ে ওঠবে বলে মত তাদের।এ প্রসঙ্গে উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন খান বলেন, ‘ল্যাব বেশি থাকলেতো অবশ্যই ভালো। তাহলে যাত্রীরা দ্রুত সেবা পাবেন। কিন্তু জায়গা আর ল্যাব কর্তৃপক্ষের উপরেও অনেক কিছু নির্ধারণ করে। তবুও বিষয়গুলো নিয়ে অবশ্যই আরও অধিক আলোচনা হবে। তারপর কাজ করা হবে’। এর আগে গত ১২ মে থেকে করোনার কারণে বাংলাদেশের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করা হয়।এমতাবস্থায় ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশে ছুটিতে আসা হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি আটকা পড়ে। এরমধ্যে সংক্রমণ কমে আসায় শর্ত দিয়ে গত ৩০ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের জন্য সকল প্রতিবন্ধকতা উঠিয়ে দেয় আরব আমিরাত। শর্ত দেয়া হয়, বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট ছাড়ার ৬ ঘণ্টা আগে র‍্যাপিড পিসিআর টেস্ট পদ্ধতিতে করোনার পরীক্ষা করে নেগেটিভ রিপোর্টধারীরাই দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন এবং সেখানে পৌঁছে আরও একবার করোনা টেস্ট করাতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের কোন বিমান বন্দরেই এ ব্যবস্থা চালু ছিল না এতদিন। এরমধ্যে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ল্যাব স্থাপনসহ কোভিড পরীক্ষার সুযোগ মিললেও চট্টগ্রামে তা এখনও হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরে এ টেস্ট চালু করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি। তবে নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

আরো সংবাদ