স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

দেশি-বিদেশি ফ্লাইটে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরছে শাহ আমানত বিমানবন্দরে

বৈশ্বিক মহামারী করোনার থাবায় ঝিমিয়ে পড়া শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে প্রতিদিন ১০টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের পাশাপাশি ক্রমে বাড়ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও।

সূত্র জানায়, করোনাকালের নানা সীমাবদ্ধতা, সংকট পেরিয়ে এখন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সপ্তাহে রাষ্ট্রয়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৩ দিন আবুধাবি ও ২ দিন দুবাইয়ের ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। শারজাহ ভিত্তিক ‘এয়ার এরাবিয়া’ সপ্তাহে ২ দিন চট্টগ্রাম-আবুধাবি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে সপ্তাহে ২ দিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইতে চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট চালু করছে ‘ফ্লাই দুবাই’। প্রতি মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার এ রুটে উড়বে এ বাজেট এয়ারলাইন্স (কম খরচের)।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাড়ায় বিমানবন্দর এলাকায় গাড়ির হাঁকডাক, কোলাহল ও জনসমাগম বাড়ছে। প্রিয়জনকে বিদায় জানাতে কিংবা বরণ করতে অনেকেই মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ভাড়া নিয়ে সপরিবারে আসছেন বিমানবন্দরে। অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হলে কেউ বা ছুটছেন পতেঙ্গা সৈকত, নেভাল রোড কিংবা বোট ক্লাবের দিকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন যাত্রী বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামে মধ্যপ্রাচ্যের প্রচুর প্রবাসী করোনার আগে পরে এসে আটকা পড়েছেন। যত বেশি ফ্লাইট চালু হবে তত দ্রুত তারা কর্মস্থলে যোগ দিতে পারবেন। আবার প্রবাসে যাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে তারাও দ্রুত ফিরতে পারবেন। কিন্তু অনেকে প্রবাসী কিংবা বিদেশগামী জানেন না নতুন নতুন ফ্লাইট চালু হচ্ছে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সারওয়ার-ই-জামান বলেন, করোনাকালীন নানা সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট ক্রমে বাড়ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গন্তব্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বাইরে আরও একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ফ্লাইট চালু রয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে আরেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ফ্লাইট চট্টগ্রাম থেকে অপারেশনে যাওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি জানান, করোনা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক গাইডলাইন এবং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শতভাগ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীসেবা দিচ্ছে। যাত্রী ও সব ধরনের কর্মীদের সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, জুতোর তলা জীবাণুমুক্ত করা, মাস্ক পরা, তাপমাত্রা পরীক্ষাসহ সব কিছু কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি নিয়মিত যে কার্যক্রম স্ক্যানিং, তল্লাশি ইত্যাদিও জোরদার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে ৯টি আন্তর্জাতিক রুটসহ ১৭ লাখ ৭৮ হাজার যাত্রী গমনাগম করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের বাইরে তিনটি বিদেশি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সপ্তাহে ৫৬০টি, দৈনিক ৪০টি ফ্লাইট ওঠানামা করতো যাত্রী ও কার্গো নিয়ে। ২০১৯ সালে ২ হাজার ৬৯৩ টন কার্গো রফতানি ও ৬ হাজার ৮৮১ টন কার্গো আমদানি হয়েছিলো এ বিমানবন্দর দিয়ে। গত ১০ বছরে ফ্লাইট সংখ্যা বেড়েছে ১ দশমিক ৮ গুণ, যাত্রী বেড়েছে ৩ দশমিক ১২ গুণ এবং কার্গো শিপমেন্ট বেড়েছে ৮ দশমিক ৯ গুণ।

আরো সংবাদ