স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলবে কবে?

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণাধীন অবকাঠামো পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সেতুটির মূল কাঠামো পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো। এরপরে সড়ক ও রেলের স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হবে।

তবে কবে নাগাদ পদ্মা সেতুর সব কাজ শেষ হয়ে যান চলাচল শুরু হবে, সেতুর টোল কত হবে, ফেরিও কি তখন চালু থাকবে, এসব বিষয়ে এখনো জানানো যায়নি।

এসব বিষয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের সর্বশেষ স্প্যানটি ১০ই ডিসেম্বর স্থাপন করার মধ্য দিয়ে সেতুর মূল কাজটি শেষ হয়ে গেল, অর্থাৎ কাঠামো তৈরি হয়ে গেল। এই স্প্যানটি স্থাপন করার মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল অবকাঠামো দৃশ্যমান হবে।

তিনি বলেন, সেতুর কাজ শেষ হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি যাতে এই সময় এগিয়ে নিয়ে আসা যায়। আমরা স্বাধীনতার ৫০তম বছর, ২০২১ সালের মধ্যেই সেতুটি চালু করতে চাই।

‘স্প্যান হচ্ছে ইস্পাতের মূল কাঠামো, যেগুলো এক পিলারের সঙ্গে আরেক পিলারের সংযোগ তৈরি করে। এরপর এসব স্প্যানের উপর গাড়ি ও রেল চলাচলের জন্য স্ল্যাব বসিয়ে উপযোগী করা হয়। এটি হচ্ছে পদ্মা সেতুর ৪১তম স্প্যান। অর্থাৎ এর আগে এরকম আরও ৪০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন স্প্যানগুলোর ওপর সড়ক ও রেল লাইনের স্ল্যাব বসানোর কাজও চলছে।’

‘এখন আমাদের অনেকগুলো কাজ বাকি থাকছে। যেমন রোডওয়ে স্ল্যাব, (এটা ৪০ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে), রেলওয়ে স্ল্যাব (এটা ৬০ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে), ব্রিজের রেলিং, স্ট্রিট ও আর্কিটেকচারাল লাইটিং, গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করতে হবে।’

ঠিকাদারের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা চেষ্টা করছি, যত তাড়াতাড়ি পারা যায় এসব কাজ শেষ করার জন্য। কারণ সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমাদের ওপর প্রত্যাশা-চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে।

আগামী একমাসের মধ্যেই সেতুর কাজ সম্পন্ন করার একটি সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে বলে তিনি জানান।

এদিকে কর্মকর্তারা বলছেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকার অনুরোধ করতে পারে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর জোর করার সুযোগ নেই। তবে প্রতিষ্ঠানটি কাজ এগিয়ে নিতে সক্ষম হলে সেটা ২০২১ সালে চালু হতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সেটা না পারলে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

সেতুর টোল নির্ধারণের প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক বলেন, সাধারণত যেসব নদীতে ফেরি চলাচল করে, সেখানে একটি স্ট্যান্ডার্ড প্রাকটিস রয়েছে যে, ফেরি পারাপারের সময় যানবাহনগুলোকে যে পরিমাণ টোল দিতে হয়, সেতু পারাপারের ক্ষেত্রেও সেটাই টোল নির্ধারণ করা হয়।

শফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত বিদেশি অর্থায়নে কোন সেতু নির্মিত হলে কত টাকা টোল হবে, সেটা নির্ধারণে দাতাদের পরামর্শ বা শর্ত থাকে। কিন্তু দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত সেতুর টোল কত হবে, সেরকম কোন নিয়মনীতি নেই। আপাতত সরকারের সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুর জন্য যে টোল হারের প্রস্তাব করেছে, সেটি ফেরি টোলের চেয়ে দেড়গুণ বেশি।

‘সেতু চালু হওয়ার পর পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য মোটরসাইকেলের জন্য ১০৫ টাকা, কার জিপের জন্য ৭৫০ টাকা, ছোট বাসের জন্য ২০২৫ টাকা, বড় বাসের জন্য ২৩৭০ টাকা, পাঁচ টনের ট্রাকের জন্য ১৬২০ টাকা, আট টনের বড় ট্রাকের জন্য ২৭৭৫ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য ১২৯০ টাকা টোল প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতি ১৫ বছর টোলের হার ১০ শতাংশ বাড়ানো হবে। তবে এখনো এই প্রস্তাবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত টোল কতো হবে, সেটা নির্ভর করে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর।’

বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই পরিশোধ বিবেচনায় নিয়েই টোলের এই হার প্রস্তাব করা হয়েছে।

ফেরি চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু সেতুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেতু চালু হওয়ার পরেও আরিচা-নগরবাড়ী রুটে ফেরি পারাপার চালু ছিল। সুতরাং সেতু চালু হওয়ার পরেও ফেরি চলবে কিনা, সেটি নির্ভর করবে চাহিদার ওপর।

পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানান, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।

‘তবে বাংলাদেশের সরকার চেষ্টা করছে, স্বাধীনতার ৫০ তম বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার। অর্থাৎ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করে যান চলাচল শুরু করতে চায়।’

সেতু চালু করার জন্য এর আগে সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২১ সালের জুন মাস। কিন্তু করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সেই সময় ১০ মাস বেড়েছে।

বাংলাদেশে এর আগে আর কোন সরকারি অবকাঠামো এতো বেশি অর্থ খরচ করে তৈরি করা হয়নি। বলা হচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এই সেতুটি।

পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর বিষয়ে সেতুর নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে। তবে বাংলাদেশের সরকার চেষ্টা করছে, স্বাধীনতার ৫০ তম বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার। অর্থাৎ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করে যান চলাচল শুরু করতে চায়।

বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যেই সেতুটি চালু হবে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হতে ১০ মাস থেকে এক বছর লাগবে।

অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ বলছেন, পদ্মা সেতু বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে। প্রথমত, সেটি মানুষের ও পণ্যের যাতায়াতের সময় বাঁচিয়ে দেবে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসাবাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থান বাড়বে।

‘আর দ্বিতীয় যেটা হবে, এই সেতুকে ঘিরে অনেক অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। পণ্য পরিবহন সহজ হওয়ায় অনেকে ওই এলাকায় গিয়ে বিনিয়োগ করবেন। দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে এটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। সেসব এলাকায় অনেকে নতুন নতুন কারখানা খুলবেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন।’

তিনি বলছেন, হয়তো সেতু হওয়ায় সেখানকার কিছু মানুষ পেশা হারাবে, কিন্তু স্বল্পমেয়াদ এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সুফলই বেশি।

পদ্মা সেতু নিয়ে আরও কিছু তথ্য

পদ্মা সেতুতে গাড়ির লেন থাকবে একেক পাশে দুটো করে এবং একটি ব্রেকডাউন লেন। অর্থাৎ মোট ছয় লেনের ব্রিজ হচ্ছে, যদিও একে বলা হচ্ছে ফোর লেনের ব্রিজ।

পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। তবে ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় নয় কিলোমিটার। দ্বিতল পদ্মা সেতুর এক অংশ থাকবে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায়, আরেক অংশ শরীয়তপুরের জাজিরায়। সেতুর ওপরে গাড়ি চলাচল করবে, রেল চলবে নিচের অংশে।

পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ করা হচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। চৌঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় করা হয়েছে ২৪ হাজার ১১৫ দশমিক ০২ কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলবে কবে?

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণাধীন অবকাঠামো পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সেতুটির মূল কাঠামো পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো। এরপরে সড়ক ও রেলের স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হবে।

তবে কবে নাগাদ পদ্মা সেতুর সব কাজ শেষ হয়ে যান চলাচল শুরু হবে, সেতুর টোল কত হবে, ফেরিও কি তখন চালু থাকবে, এসব বিষয়ে এখনো জানানো যায়নি।

এসব বিষয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের সর্বশেষ স্প্যানটি ১০ই ডিসেম্বর স্থাপন করার মধ্য দিয়ে সেতুর মূল কাজটি শেষ হয়ে গেল, অর্থাৎ কাঠামো তৈরি হয়ে গেল। এই স্প্যানটি স্থাপন করার মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল অবকাঠামো দৃশ্যমান হবে।

তিনি বলেন, সেতুর কাজ শেষ হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি যাতে এই সময় এগিয়ে নিয়ে আসা যায়। আমরা স্বাধীনতার ৫০তম বছর, ২০২১ সালের মধ্যেই সেতুটি চালু করতে চাই।

‘স্প্যান হচ্ছে ইস্পাতের মূল কাঠামো, যেগুলো এক পিলারের সঙ্গে আরেক পিলারের সংযোগ তৈরি করে। এরপর এসব স্প্যানের উপর গাড়ি ও রেল চলাচলের জন্য স্ল্যাব বসিয়ে উপযোগী করা হয়। এটি হচ্ছে পদ্মা সেতুর ৪১তম স্প্যান। অর্থাৎ এর আগে এরকম আরও ৪০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন স্প্যানগুলোর ওপর সড়ক ও রেল লাইনের স্ল্যাব বসানোর কাজও চলছে।’

‘এখন আমাদের অনেকগুলো কাজ বাকি থাকছে। যেমন রোডওয়ে স্ল্যাব, (এটা ৪০ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে), রেলওয়ে স্ল্যাব (এটা ৬০ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে), ব্রিজের রেলিং, স্ট্রিট ও আর্কিটেকচারাল লাইটিং, গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করতে হবে।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা চেষ্টা করছি, যত তাড়াতাড়ি পারা যায় এসব কাজ শেষ করার জন্য। কারণ সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমাদের ওপর প্রত্যাশা-চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে।’

আগামী একমাসের মধ্যেই সেতুর কাজ সম্পন্ন করার একটি সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে বলে তিনি জানান।

এদিকে কর্মকর্তারা বলছেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকার অনুরোধ করতে পারে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর জোর করার সুযোগ নেই। তবে প্রতিষ্ঠানটি কাজ এগিয়ে নিতে সক্ষম হলে সেটা ২০২১ সালে চালু হতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সেটা না পারলে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

সেতুর টোল নির্ধারণের প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক বলেন, সাধারণত যেসব নদীতে ফেরি চলাচল করে, সেখানে একটি স্ট্যান্ডার্ড প্রাকটিস রয়েছে যে, ফেরি পারাপারের সময় যানবাহনগুলোকে যে পরিমাণ টোল দিতে হয়, সেতু পারাপারের ক্ষেত্রেও সেটাই টোল নির্ধারণ করা হয়।

শফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত বিদেশি অর্থায়নে কোন সেতু নির্মিত হলে কত টাকা টোল হবে, সেটা নির্ধারণে দাতাদের পরামর্শ বা শর্ত থাকে। কিন্তু দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত সেতুর টোল কত হবে, সেরকম কোন নিয়মনীতি নেই। আপাতত সরকারের সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুর জন্য যে টোল হারের প্রস্তাব করেছে, সেটি ফেরি টোলের চেয়ে দেড়গুণ বেশি।

‘সেতু চালু হওয়ার পর পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য মোটরসাইকেলের জন্য ১০৫ টাকা, কার জিপের জন্য ৭৫০ টাকা, ছোট বাসের জন্য ২০২৫ টাকা, বড় বাসের জন্য ২৩৭০ টাকা, পাঁচ টনের ট্রাকের জন্য ১৬২০ টাকা, আট টনের বড় ট্রাকের জন্য ২৭৭৫ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য ১২৯০ টাকা টোল প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতি ১৫ বছর টোলের হার ১০ শতাংশ বাড়ানো হবে। তবে এখনো এই প্রস্তাবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত টোল কতো হবে, সেটা নির্ভর করে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর।’

বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই পরিশোধ বিবেচনায় নিয়েই টোলের এই হার প্রস্তাব করা হয়েছে।

ফেরি চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু সেতুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেতু চালু হওয়ার পরেও আরিচা-নগরবাড়ী রুটে ফেরি পারাপার চালু ছিল। সুতরাং সেতু চালু হওয়ার পরেও ফেরি চলবে কিনা, সেটি নির্ভর করবে চাহিদার ওপর।

পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানান, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।

‘তবে বাংলাদেশের সরকার চেষ্টা করছে, স্বাধীনতার ৫০ তম বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার। অর্থাৎ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করে যান চলাচল শুরু করতে চায়।’

পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর বিষয়ে সেতুর নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে। তবে বাংলাদেশের সরকার চেষ্টা করছে, স্বাধীনতার ৫০ তম বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার। অর্থাৎ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করে যান চলাচল শুরু করতে চায়।

বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যেই সেতুটি চালু হবে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হতে ১০ মাস থেকে এক বছর লাগবে।

অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ বলছেন, পদ্মা সেতু বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে। প্রথমত, সেটি মানুষের ও পণ্যের যাতায়াতের সময় বাঁচিয়ে দেবে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসাবাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থান বাড়বে।

‘আর দ্বিতীয় যেটা হবে, এই সেতুকে ঘিরে অনেক অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। পণ্য পরিবহন সহজ হওয়ায় অনেকে ওই এলাকায় গিয়ে বিনিয়োগ করবেন। দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে এটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। সেসব এলাকায় অনেকে নতুন নতুন কারখানা খুলবেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন।’

তিনি বলছেন, হয়তো সেতু হওয়ায় সেখানকার কিছু মানুষ পেশা হারাবে, কিন্তু স্বল্পমেয়াদ এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সুফলই বেশি।

সেতু চালু করার জন্য এর আগে সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২১ সালের জুন মাস। কিন্তু করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সেই সময় ১০ মাস বেড়েছে।

বাংলাদেশে এর আগে আর কোন সরকারি অবকাঠামো এতো বেশি অর্থ খরচ করে তৈরি করা হয়নি। বলা হচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এই সেতুটি।

পদ্মা সেতু নিয়ে আরও কিছু তথ্য

পদ্মা সেতুতে গাড়ির লেন থাকবে একেক পাশে দুটো করে এবং একটি ব্রেকডাউন লেন। অর্থাৎ মোট ছয় লেনের ব্রিজ হচ্ছে, যদিও একে বলা হচ্ছে ফোর লেনের ব্রিজ।

পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। তবে ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় নয় কিলোমিটার।

দ্বিতল পদ্মা সেতুর এক অংশ থাকবে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায়, আরেক অংশ শরীয়তপুরের জাজিরায়।

সেতুর ওপরে গাড়ি চলাচল করবে, রেল চলবে নিচের অংশে।

পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ করা হচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। চৌঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় করা হয়েছে ২৪ হাজার ১১৫ দশমিক ০২ কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।

আরো সংবাদ