আটকে পড়া বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসন এবং বাংলাদেশিদের চাকরির বাজার পুনরায় খোলার ব্যবস্থা নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অনুরোধ করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর।গত সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও আমিরাতিকরণ মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি সাইফ আল সুয়েইদির সাথে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে এক বৈঠকে তিনি এ অনুরোধ করেন।দুবাইতে আন্ডার সেক্রেটারির কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মন্ত্রণালয়ের অ্যাসিস্টেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি আবদুল্লাহ আলী রশিদ আল নুয়েইমি, মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং দুবাইয়ের বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন এবং আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উপপ্রধান মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আমিরাতে আসার আগে দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্ডার সেক্রেটারি বাংলাদেশি শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমী বলে অভিহিত করে তাদের দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং গত সাড়ে চার দশকে আমিরাতের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বকে তাদের দেশে বাংলাদেশী কর্মীদের কর্ম সংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এবং মহামারী চলার সময়ে তাদের প্রতি উপযুক্ত পরিচর্যা নেওয়ায় ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি রাষ্ট্রদূত সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভ্রমণের পূর্বে কর্মকেন্দ্রিক প্রশিক্ষণ এবং কর্মীদের কাজের অধিকার, কর্ম পরিবেশ, অভিবাসন গ্রহনেচ্ছু দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে ওরিয়েন্টেশনের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন।তিনি বিশেষ করে আমিরাতে যাওয়া নারী গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে বিশেষ জোর দেন।এ প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত প্রস্তাব করেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারিভাবে অথবা বেসরকারি খাতের সহায়তায় বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মনোনয়ন দিতে বা স্থাপন করতে পারে। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে দীর্ঘকাল কর্মজীবন শেষ করার পর দক্ষতা অর্জনকারী প্রত্যাবর্তনকারী শ্রমিকদের ‘দক্ষতা সার্টিফিকেশন’ চালু করার প্রস্তাবও দেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নে যৌথ কমিটির (জয়েন্ট কমিটি) প্রথম বৈঠক আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে ইউএই প্রতিপক্ষকে জানান। তিনি আমিরাত সরকারকে বাংলাদেশী নাগরিকদের তাদের দেশে কর্মসংস্থান করার জন্য এবং ভিজিট ভিসা থেকে সহজেই কর্মসংস্থান ভিসায় ভিসা স্থানান্তর করার সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষ রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবসমুহকে স্বাগত জানান হয় এবং আগামী জয়েন্ট কমিটির ঢাকা বৈঠকে সম্ভাব্য সব বিষয়ে আলোচনার জন্য তাদের সদিচ্ছা প্রকাশ করেন।আমিরাতের পক্ষ থেকে অভিবাসন সংক্রান্ত সব বিষয়ে আসন্ন যৌথ কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হয়।বৈঠকে অভিন্ন দ্বিপাক্ষিক স্বার্থে বিশেষ করে আবুধাবি ডায়ালগ, কলম্বো প্রসেস এবং ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন।দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে উপহার বিনিময়ের মাধ্যমে বৈঠক শেষ হয়।