স্বাধীনদেশ টেলিভিশন

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় : তথ্যমন্ত্রী

মতপ্রকাশের নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে তাদের আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা প্রদর্শনীর সমাপনী ও ডিআরইউ সম্মাননা প্রদান’ অনুষ্ঠানে রাজধানীর সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া কিংবা হযরত মুহাম্মদ (সা:)কে ব্যঙ্গ করে কোনো চিত্র প্রকাশ করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় ও এটি করা উচিত নয়। একইসাথে ধর্মের নামে কাউকে হত্যা করাও আমরা সমর্থন করি না।

ডিআরইউ’র অনুষ্ঠানে বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেমন থাকতে হবে, তেমনি আমার স্বাধীনতা যেন অন্যের অনুভূতিতে আঘাত না দেয়, সেটিও লক্ষ্য রাখতে হবে।

মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, উন্নত রাষ্ট্র গঠনে নবপ্রজন্মের মনন তৈরিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনন্য। প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকরা জাতিকে পথ দেখায়, তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়।

তিনি বলেন, আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠন করা, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনা করা, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা। এবং সেই উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে হলে একটি উন্নত প্রজন্মেরও প্রয়োজন, যে প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। আর সেই নতুন প্রজন্মের মনন তৈরিতে, দেশকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করতে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও পরবর্তীতে দেশ গঠনে সাংবাদিকদের অনবদ্য ভূমিকা ছিল উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আজকের প্রেক্ষাপটে নতুন প্রজন্মের মনন তৈরি, সমাজে তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়া, সমাজের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরা, দায়িত্ববানদেরকে আরো দায়িত্ববান করা, সঠিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রধানমন্ত্রী একারণে সাংবাদিকদের প্রতি মমত্ববোধ থেকে এই করোনাকালে তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছিলেন এবং সেই তহবিল থেকে আমরা সহায়তা করে যাচ্ছি, যেটি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা কোনো দেশেই করা হয়নি।’

‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারও সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করে’ স্মরণ করিয়ে মন্ত্রী বলেন, তবে যদি শুধুই সমালোচনা হয়, ভালো কাজের প্রশংসা না হয়, তাহলে যারা ভালো কাজ করে, তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে, সেজন্য সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও প্রয়োজন।

তথ্যমন্ত্রী এসময় ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানমালা সুন্দর ও সফলভাবে সম্পাদন, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখার ওপর সম্মাননা প্রদানের আয়োজনের জন্য ডিআরইউকে অভিনন্দন জানান এবং তাদের ভবিষ্যৎ সাফল্য কামনা করেন।

বিভিন্ন বক্তার আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি জানান, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন এবং সম্প্রচার আইনের খসড়া দু’টি অনেকদিন আগে আইন মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছিল। গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং করে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে চূড়ান্ত করার পরামর্শসহ আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি। গণমাধ্যমকর্মী আইন পাশ হলে প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইনের সকল সাংবাদিকের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। সম্প্রচার আইন হলে এর আওতায় সম্প্রচার কমিশনের মাধ্যমে দেশের সম্প্রচারখাত পরিচালিত হবে।’

এ সময় মুজিববর্ষের বিভিন্ন কমিটিতে সম্পৃক্ত বহুসংখ্যক সাংবাদিককে তাদের অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান ড. হাছান।

মন্ত্রী অনুসন্ধানী রিপোর্টের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ ধরণের রিপোর্টের জন্য বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে এবং পিআইবির নিজস্ব বাজেটের মাধ্যমে আরো বেশি সংখ্যক সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ দিতে বলা হয়েছে।

ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী’র সঞ্চালনায় বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বিশেষ অতিথি হিসেবে ও ডিআরইউ সদস্যবৃন্দ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তথ্যমন্ত্রীর পক্ষে বিশেষ অতিথি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ১৫জন সাংবাদিকের হাতে ডিআরইউ সম্মাননা তুলে দেন। দৈনিক বর্তমানের চিফ রিপোর্টার্স মোতাহার হোসেন সম্মাননাপ্রাপ্তদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন।

আরো সংবাদ